Wednesday, November 20, 2019

বেশ্যা

'এই ওষুধটা খেয়ে নেবেন, হরিকে বলে দিচ্ছি কখন কটা খেতে হবে। '
প্রেস্ক্রিপশানটা লিখে পেনটা পকেটে পুরে টিনের ঘরটা থেকে উঠে দাঁড়ালেন ডাক্তারবাবু। আর সঙ্গে সঙ্গে ঝমঝমিয়ে ঝড় - বৃষ্টি শুরু হল।
হরি রুগীর পালিত ছেলে। বললো
- ' ডাক্তার বাবু এই বৃষ্টিতে বেরোবেন না, ছাতাও নেই। এই মরশুমের প্রথম বৃষ্টি, শরীর খারাপ করবে। '
ডাক্তার কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললেন - 'আমায় যম ও ভয় পায় ' বলে এগোতে গেলেন বাইরের দিকে।
' আপনি তো অদ্ভুত একজন। '
রুগী উঠে বসলো। ওই টুকু ঘরে কারেন্ট নেই। হ্যারিকেনের আলোটা টিমটিম করে জ্বলছিল। সেই আলোতে রুগীর মুখটা অদ্ভুত ভাবে ফুটে উঠছিলো। যেন এক আকাশ কালো মেঘে এক মুঠো বিদ্যুৎ। কিংবা গ্রীষ্মের চড়া রোদ্দুরে এক পশলা বৃষ্টি। কথাটা শুনে ডাক্তার বাবু থমকে দাঁড়ালেন। ঘুরে তাকালেন রুগীর চোখে ।
রুগী বলে উঠলো আবার - 'সোজা কথা বলুন না একজন বেশ্যার ঘুরে রাতে থাকতে আপনার সমাজ আপনাকে বিদ্রুপ করছে। '
ডাক্তার বাবু তর্ক না করে বেরিয়ে এলেন। ভিজে ভিজে নিজের ঘরে পৌঁছলেন। দোতালা সুসজ্জিত ঘরটা বিদ্যুতের আলোয় ঝলমল করছে। বাড়ির সামনে রাখা মারুতি গাড়ি। স্ত্রী দরজা খুলে দিলেন। টিউবলাইটের আলোটা স্ত্রীর গলায় পরা গয়নাগুলোয় পড়ে চকচক করছিল। তাঁর চোখে মুখে আভিজাত্যের ছাপ। অনেকটা শপিং মলে সাজানো কোম্পানির দামী জামাগুলোর মত। ডাক্তারবাবু স্নান করে স্ত্রী খাবার পরিবেশন করলেন। ডাক্তারবাবু ক্লান্ত ছিলেন, খেয়ে ঘুমিয়ে গেলেন। স্ত্রী তখন এসে হোয়াটসআপ খুললেন। মেসজ পাঠালেন একজন ছেলে বন্ধুকে - 'কিরে একাই ঘুমিয়ে পড়লি ?
খেয়েছিস ? একটা ছবি পাঠাস তোর। আমায় কেমন দেখতে লাগছে বলিস এই ডিপিটায়। '

No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...