Wednesday, November 20, 2019

হতাশ জীবনে আশার আলো

রেজাল্ট ঠিক হল না, হাতে পয়সা নেই, ভালোবাসার লোকেরা একে একে ছেড়ে চলে গেছে, কারো কাছে আর দয়ার পাত্র হতেও গায়ে লাগে, বন্ধুরা দেখেছে এর খারাপ হতাশার সময়ে বেকার দাঁড়িয়ে নিজের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট কেন করবো, কেউ হেসেছে, কেউ কাঁদার ভান করেছে, কেউ ভালোবাসা দয়ার ছলে দিতে চেয়েছে, নিতে ইচ্ছে হয়নি, কেউ ফোন করলে কথা বললেও সবাই যেন ব্যস্ত। খিদে কমে গেছে, ঘুম বারবার ভেংগে যায় বাজে স্বপ্ন দেখে, ভোর ভোর ঘুম ভাংগে। কোথাও যেতে ইচ্ছে করেনা, কিছু করতে ইচ্ছে করেনা। মাঝে হাত-পা অসাড় লাগে। কাজ, পড়াশোনা সবকিছুতে পিছিয়ে পড়া। জীবনটা হোপলেস, ওয়ার্থলেস, হেল্পলেস হয়ে গেছে।
হয়তো সব কিছু এরকম নয়, কিন্তু অনেক কিছুই এরকম হতে পারে জীবনে হঠাত করে। যে কারণেই হোক। আপনি তাহলে ডিপ্রেশনে ভুগছেন। ঘাবড়ানোর কিছু নেই, এই পৃথিবীর মোটামুটি ৮ জনে ১ জন ছেলে, ৬ জনে ১ জন মেয়ে এই ডিপ্রেশনের স্বীকার। একটা বাচ্চা থেকে শুরু করে সদ্য প্রসব করা মা যে কেউ হতে পারে এর স্বীকার। 'রিং' মুভিতে ছিল পোস্টপার্টাম ডিপ্রেসন কি মারাত্মক হতে পারে। 'কুং ফু পান্ডা' র একটা ফেমাস ডায়লগ আছে - 'আই ইট মোর, হোয়েন্ আই আম ডিপ্রেসড।' এটাকে আটিপিকাল ডিপ্রেসনে ফেলা যেতে পারে যেখানে খিদে, ঘুম বেড়ে যায়।
যাই হোক, ডিপ্রেসনের পরিণতি কি হতে পারে।
১) কিছুই না
২) কিছুই না
৩) কিছুই না (সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ)
বি:দ্র:- যদি আপনি চান। নাহলে অনেক কিছুই হতে পারে। হঠাত একদিন ভোর রাতে ঘুম ভেংগে মনে হল অরিজিত সিং এর গান শুনে ' বেঁচে থেকে লাভ কি বল '। আপনি হোস্টেলে ছাদে গিয়ে প্রচুর কুয়াশার মাঝে গিয়ে দেখলেন শ্যামা মা আপনাকে ডাকছে। হঠাত কুয়াশায় ঝাঁপ দিলেন। শ্যামা- মা র কোল ভেবে। গ্রাভিটি বস্ ভালোবাসা,বা ইরেক্টাইল ডিসফাংশনে সেভাবে রেসপন্সিবল না হলেও কিছু ক্ষেত্রে খুব চাপের । পরের দিন দেহটা ঘিরে আপনার বাবা-মা কাবলার রস এর বলা পাঁচটা স্টেজ দিয়ে যাবেন।প্রথমে অস্বীকার করবেন এটা মেনে নিতে পারবেন না। পরে রাগ হবে। কখনো আপনার উপর, কখনো ভগবান বলে অলীক বস্তুটার উপর, কখনো নিজেদের উপর।কেন এরকম হল। সেই ডিপ্রেসনে যাবেন।তারপর হয়তো স্বীকার করবেন সত্যিটা। শুধু বাবা-মা কেন। আপনার প্রিয় বন্ধুরা যারা আপনাকে পাত্তাও দিতনা -তারাও এই স্টেজগুলোর মধ্যে দিয়ে যাবে। কম-বেশি। আফশোস করবে - হয়তো আপনাকে সময় দিলে আপনার সাথে এরকম হতনা। কেউ ভাববে ইস ওকে নিজের সাথে সোনাগাছি নিয়ে গেলেই পারতাম। আপনাকে যে ভালোবাসার মানুষগুলো ছেড়ে গিয়েছে তারা খবরটা পেয়ে নিজেদের দোষ দিতে থাকবে।
এদের মধ্যেই কেউ এই হতাশা সহ্য করতে না পেরে হয়তো আপনার পথই বেছে নেবে। কি দারুণ না ?
আপনাকে আমি সাপোর্ট করছি। শুধু আপনি নন অনেক পোকা-মাকড়, জীব জন্তুও এই সেল্ফ ডেস্ট্রাকশনের পথ বেছে নেয়। শুধু লেমিং নিয়ে একটা মিসকনসেপশন আছে মানুষের মধ্যে ওরা নাকি মাইগ্রেশনের সময় সুইসাইড করে উইকিপিডিয়া এটা স্বীকার করেনা । যাই হোক, আপনাকে আমি সাপোর্ট করছি। কি অসীম ক্ষমতা আপনার। শুধু নিজেকে নয়, আরো কতজনকে নিজের সাথে মেরে দিয়ে গেলেন।
আচ্ছা এরকমও তো হতে পারে আপনি এরকম চান না। আপনি বেরোবার রাস্তা খুঁজছেন। আমি জানি, আপনার কাছে কিছু নেই এখন। কিন্তু আপনি ভুলে গেছেন, পৃথিবীর সব থেকে মূল্যবান সম্পদ আপনার কাছে আছে - সময়। কাজে লাগান। শূন্য থেকে শুরু করে কত মানুষ একা পৃথিবীতে উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েছে। সেই গল্প গুলো নেট খুললেই পড়া যায়। প্রথমে জোর করে হাসুন, নিজের পায়ে সুড়সুড়ি দিন, নিজেকে কাতুকুতু দিন এগুলোতে টাকা লাগেনা। নিজের জন্য কফি বানিয়ে খান, নিজে মাংসের ঝোল রান্না করে খান, খাওয়ান। একটু টাকা লাগে ।ইচ্ছে হবেনা। জোর করে। পজিটিভ লেখা, স্পিচ পড়ুন, আমার লেখাটায় লাইক করুন। নিজের হবিগুলোকে আস্কারা দিন সময় কাটাতে। সেরকম কিছু না থাকলে নতুন হবি বানিয়ে নিন, যেটা মানুষের ক্ষতি করবেনা। এর পর এই আনন্দটা অভ্যেস হবে। ধীরে ধীরে কাজে মন বসাতে কাউকে লাগবেনা।
খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে লাইফকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিন জোর গলায় - হিট মি কাওয়ার্ড, আই আম নট আফ্রেড।
দু ফোঁটা জল পড়ুক না। ক্ষতি নেই।
ডিপ্রেশনকে মাইল্ড অবস্থাতেই খুন করুন।

No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...