Saturday, January 7, 2017

আলো

'এখন ভারতে ১০০ জন পুরুষ পিছু ৯৪ জন মহিলা এর জন্য মেয়েদের খুব সুবিধে হয়ে গেছে, আর ছেলেদের অসুবিধে। ' বলতে সবাই হা হা করে হেসে উঠলো।
আর একজন মেয়ে বলে উঠলো 'যে কারণে এখন গ্যাংগ ব্যাংগ টা বিশেষ সাইটে খুব চলছে। ' আবার হাসির সুনামি এল।
পার্টি শেষের মুখে । পার্টির বুদ্ধিটা শ্যামলবাবুরই ছিল। বেশকিছুদিন হল তার ছেলের লক্ষণ গুলো খুব সুবিধের মনে হচ্ছিলনা। শ্যামলবাবু পেশায় একজন চিকিতসক। তার ছেলে ও ডাক্তার। তার মা আলাদা থাকেন তার বাপেরবাড়িতে। আগেরদিন যখন তার ছেলে প্রহ্লাদ এসে বললো - 'বাবা আমি প্রচন্ড রকম বিচলিত এই সংসারের অনিত্য নিয়ে। আমি সত্য কি জানতে চাই। তাই আমি ঠিক করেছি সংসারের মায়াজালে নিজেকে আর আবদ্ধ করবোনা। '
বাবা বিষয়বিমুখ ছেলেকে বলেছিল, ' দেখ্, তুই এখন যুবক। এই পৃথিবীর কিছুই ভোগ করিসনি। তুই এখন প্রতিষ্ঠিত। সরকারি অফিসার। অনেক সম্মান তোর। তোর সংসার করার বয়স হয়েছে। তোর বয়সে এ ধরনের কথা মানায় না।'
ছেলে - 'যদি আমায় বল আমার মৃত্যু হবেনা, রোগ হবেনা, বার্ধক্য আমাকে গ্রাস করবেনা, আমার লাইফ পার্টনার আমাকে ছেড়ে যাবেনা, তার মৃত্যু হবেনা, বিপদ আমার বিষয় সম্মান নাশ করবেনা তবে আমি তোমার কথা মানবো।'
বাবা-
'বেশি পড়াশোনা করে তোর বুদ্ধিভ্রম হয়েছে। এই বুদ্ধি মাথা থেকে মুছে ফেল্। যে ইরেলিভ্যান্ট আর অপ্রাপ্য কামনা করে সে উপহাসের পাত্র হয়ে থাকে।'
ছেলে -
'তা হই। কিন্তু এটা তো আরো হাস্যকর যে মানুষ অজ্ঞ আর অহংকারে মত্ত। তাই নিজে পরাধীন, রোগ আর জরায় পীড়িত হয়েও, মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও এই সত্যগুলিকে ঘৃণা করে। মানুষ নিজেরই দেহজাত মল, মূত্র, বমি কে ঘৃণা করে। কেউ স্বয়ং এইরকম হয়ে যদি সেই স্বভাবসম্পন্ন অন্যকে ঘৃণা করে সেটা কি আরো হাসির নয় ?? '
এটা শুনেই শ্যামলবাবুর অবস্থা শূলবিদ্ধ হাতির মত হয়ে গেল।
প্রহ্লাদের জন্মের সময় তাদের বাড়িতে এক সাধু এসেছিলেন। ওর মা র আবার সাধুতে খুব ভক্তি ছিল।সাধুকে বাড়িতে তাই সেদিন আশ্রয় দেওয়া হয়। সেই সাধু প্রহ্লাদের হাত দেখে বলেছিলেন এই ছেলে সংসারের কল্যাণ সাধনে জন্মেছে। বলে ছেলের দু'পা ধরে চুম্বন করেছিলেন।
আজ সেই সাধুর কথা মত যদি তার ছেলে বাড়ি ছেড়ে দেয় সেই ভয়ে ঘুম হলনা শ্যামলবাবুর।
পরেরদিন ঠিক করলেন পার্টি দেবেন। পার্টিতে তার যত বন্ধু ছিল আর তাদের বিবাহযোগ্যা মেয়েরা ছিল, তাদের বান্ধবীদের সমেত ডাকলেন। বন্ধুদের সবাইকে ফোনে বললেন তার সমস্যার কথা। বললেন-' যাকে ছেলের পছন্দ হবে তাকেই বউমা করে নেবেন। '
আর এত গুণের অধিকারী আর্থসামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত প্রহ্লাদকে জামাই করতে কে না চাইবে। বন্ধুরা নিজেরাই বলতো শ্যামলবাবুকে। এতদিন উনি নিজেই এড়িয়ে যেতেন। এবার টনক নড়েছে। শ্যামলবাবু বন্ধুদের বললেন, ওরা যেন মেয়েদের আর তার বান্ধবীদের নিয়ে চলে আসেন। তারপর আনন্দ করে তার বাড়িতেই থেকে যায়। শ্যামলবাবু প্রোজেক্টারে সিনেমা দেখাবেন মেয়েদের । বন্ধুদের দায়িত্ব সেই সময় প্রহ্লাদকে বোঝাবেন যে ডাক্তারের ছেলে ডাক্তার হয়ে তার মুখে এসব মানায় না। এই পৃথিবীটা তার ভোগের জন্য পড়ে রয়েছে। তার ক্ষমতায় সে যা চায় তাই পেতে পারে।
পার্টিতে সব কিছুই ছিল। মদ, মাংস। ছিলনা শুধু প্রহ্লাদ। সে একবার তার বাবাকে জানালো সে রাত করে ঢুকবে। কারণটাও জানা শ্যামলবাবুর। যতটা এড়ানো যায় সবাইকে। যাই হোক, প্রহ্লাদ যখন বাড়িতে ঢুকলো তখন শ্যামলবাবুর বাড়িতে সবার শরীর মন মদাসক্ত। সেই অবস্থাতেই প্রহ্লাদকে ডেকে নিয়ে গেল শ্যামলবাবুর বন্ধুরা অন্য একটা ঘরে। ওদিকে সিনেমা শেষের পথে। মদের নেশায় সবাই একটা বড় ঘরে শয্যাশায়ী। ঘুমের ঘোরে সবাই অবসন্ন।
বন্ধুদের মধ্যে শ্যামলবাবুর একজন ডাক্তার বন্ধু মদের নেশায় জড়ানো স্বরে তার বক্তব্য শুরু করলো।
'দেখো তুমি এখন ইয়ং। এসব চিন্তা হতাশায় আসতেই পারে।তবে একটা সত্যি কথা - বিয়ে করে কোন লাভ নেই। ডাক্তারদের বিয়ে সংসার করা উচিত নয়। আমরা সবাই পস্তাচ্ছি। তার থেকে তুমি কয়েকজন গার্ল্ফ্রেন্ড রেখে দেবে। নার্সিং হোম করবে। মাসে দশ - বারো লাখ ইনকাম না হলে কিসের ডাক্তারি। দামী বাড়ি - গাড়ি তে ঘুরে বেড়াবে। যে গার্ল্ফ্রেন্ডের যখন সময় হবে তার সাথে তখন। লাইফটা এনজয় করার জন্য।'
বাকিরা সবাই তাতে সায় দিল।
এরপর আরো অনেকে এরকম অনেক কিছু বললো। প্রহ্লাদ চুপ করে সবার বক্তব্য শুনতে লাগল। তারপর সবাই যখন সোফাতে, মেঝের দামী কার্পেটে ঘুমিয়ে পড়লো প্রহ্লাদ রুম থেকে বেরিয়ে এল। বেরিয়ে এসে দেখল, মাঝের বড় ঘরটায় প্রায় ১৫-১৬ টি মেয়ে মরা কাঠের মত শুয়ে আছে। একজন তার একটি হাতকেই বালিশ বানিয়ে শুয়ে আছে। আর একজনের মাথার চুল খোলা, তার বুকের লজ্জানিবারণের ওড়নাটি বিস্রস্ত। যেন একটি ভোমরা হাস্যময় নদীর জলের ফেনায় গুঞ্জন করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে। অন্য একজন কোন পদ্মের মধ্যভাগের মত নরম, উজ্জ্বল হাতদুটো দিয়ে প্রহ্লাদের হরিনাম করার খোলটিকে পাশবালিশের মত জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে। কয়েকজন গভীর ঘুমে অবশ হয়ে দামী কার্পেটের উপর শুয়ে যেন কোন হাতির তান্ডবে কিছু গাছের ডালপালা ছিন্ন হয়ে মেঝেতে পড়ে । একজন দরজার কাছে বাঁকা ধনুকের মত শুয়ে। দুতিনজন একে অপরকে জড়িয়ে সোফাতে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছে। একজন অত্যাধুনিক ঢিলেঢালা ড্রেস পরে এসেছিল। কিন্তু ঘুমের সময় তার কাঁধ থেকে সেই পোশাক খুলে গেছে। সে তার সেই পোশাকটিকে দুই উরুর মাঝের গহ্বরে নিয়ে ঘুমিয়ে, পোশাকটি যেন তার রতিক্রীড়ার শেষে ক্লান্ত শয্যাসংগী। আর একজনকে দেখে মনে হচ্ছে হাতির আঘাতে কোন স্ত্রী প্রতিমা ভেংগে পড়ে রয়েছে। কয়েকজন ঘুমের মাঝে উৎকট নি:শ্বাস ফেললো আর দুই বাহু ছড়িয়ে হাই তুলতে লাগল। একজনের মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল। গোপন অংগ প্রকাশিত করে সে মদমত্তের মত শুয়ে ছিল।
এভাবে একাধিক শিক্ষিতা আধুনিকাদের মদের প্রভাবে গভীর নিদ্রায় বিভিন্নভাবে দেখে প্রহ্লাদের মনে হল যেন এক হ্রদে প্রবল ঝড়ে কিছু পদ্মদল ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে । দিনের বেলায় এই সুন্দরদেহ আর মধুর বচনের স্নিগ্ধ স্বভাবের নারীতে অনুরক্ত হয় একজন পুরুষ। তারা কেউ এভাবে ভাবেনা তাদের। পার্থক্যটা অনুভব করলো প্রহ্লাদ। শ্যামলবাবুর বুদ্ধি বুমেরাং হয়ে ফিরে এল তার কাছে। মাথায় নানারকমের চিন্তা নিয়ে প্রহ্লাদ তার রুমে ঢুকলো। আজ রাতেই তাকে এই মায়ার সংসার ত্যাগ করতে হবে। তার আগে একবার তার প্রাক্তন প্রেমিকাকে মনে পড়লো। তখন রাত এগারোটা। ফোন করলো তাকে। ফোন তুললো।
'কি ব্যাপার? ' কাঁপা কাঁপা গলায় প্রশ্ন এল ওই প্রান্ত থেকে।
কয়েক সেকেন্ড কি বলবে বুঝতে পারলো না। মনে হল তাকে আর একবার যদি জড়িয়ে ধরতে পারতো। তারপর বললো -'ঘুমাওনি ? '
পাশ থেকে তার মা চেঁচিয়ে উঠলো।
'কে ফোন করেছে এত রাতে রে '
ফোনটা তড়িঘড়ি কেটে দিল প্রহ্লাদ। ভেবে দেখল এখন ওকে খুব দরকার ছিল। না পেলে প্রহ্লাদ কষ্ট পাবে। আবার ওকে পেতে জোর করলে ওর মা কষ্ট পাবে। এভাবে সংসারের সব কিছুই দু:খের জালে আবদ্ধ। ভাবতে ভাবতে বাথরুমে ঢুকলো। প্রস্রাব করে ফ্লাশ করতে গিয়ে দেখলো একটা আরশোলা বাথরুমের প্যানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে আবার ভাবলো আমি যদি ফ্লাশ করি আরশোলাটা মারা যাবে। না করলে বাথরুমে গন্ধ থেকে যাবে। এরকম ভাবতে ভাবতে সে তার মাথা দুহাতে ধরে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লো। এই পৃথিবীতে সব কিছুই অনিত্য। সব কিছুই। এর থেকে মুক্তির উপায় কি ? গীতায় বলা আছে আত্মা শরীরধর্মী। তাই দু:খের কারণ এই জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পেতে আত্মাকেও ত্যাগ করতে হবে। তবেই অহংকারের ত্যাগ হবে। নাহলে সুপ্রিম উইজডম লাভ করা সম্ভব নয়। ইন্দ্রিয়গুলিকে জয় করেও আবার হার স্বীকার করতে হবে।
ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ল প্রহ্লাদ। একটা সাধারণ জামা প্যান্ট পরে আর কিছু টাকা নিয়ে সত্যের সন্ধানে। দুদিন এভাবে যেদিকে দুচোখ যায় চলতে চলতে ক্ষুধার্ত আর তৃষ্ণার্ত প্রহ্লাদ একটা গ্রামে এল। সে তার মাথার চুল কামিয়ে ফেলেছে। মুন্ডিতমস্তক প্রহ্লাদের মাথায় তখন স্থান-কাল-পাত্র জ্ঞান লোপ পেয়েছে। সামনে একটা টিউবওয়েলের জল খেলো প্রহ্লাদ। একটা বড় গাছের তলাটা বাঁধানো ছিল। সেখানেই ধ্যানে বসলো। প্রহ্লাদের শরীর ক্লান্ত, কিন্তু মন প্রসন্ন। মনের ভিতর নানারাকম বিতর্ক চলতে লাগলো। এরকম পাঁচ-ছয় দিন থাকার পর প্রহ্লাদের শরীর আরো ভেংগে পড়ল। তার হাতের লাঠিতে ভর করে সে সেই গ্রামে কিছু ভিক্ষার সন্ধানে বেরোল। তার এত কম বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি নেওয়াকে আলস্য আর মতিভ্রম বলে বাজারের অনেকে খিল্লি ওড়ালো। সবাই হাসাহাসি করতে লাগল - আমাদের গ্রামে এক ষাঁড় আছে যে খোড়া কিন্তু কাউকে তাড়া করতে গেলে খোড়া থাকেনা আর। এটা নতুন ষাঁড়।
প্রহ্লাদের কানে কিছুই ঢুকলনা। একজন যুবক তাকে একটা এক টাকার কয়েন ছুঁড়ে দিল। প্রহ্লাদ সেটি মাটি থেকে গুড়িয়ে তার হাতে গুঁজে দিল। স্মিত হেসে বললো - শ্রদ্ধয়া দেয়ম্, অশ্রদ্ধয়া অদেয়ম্।
সবার মধ্যে একটা হাসির রোল উঠলো।
এর পর হাটতে হাটতে একটা পুকুরের কাছে এসে আর শরীরে বল পেলনা। অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।
যখন চোখ খুললো তখন দেখল সে একটা ঘরের বিছানায় শুয়ে। সামনে কয়েকটা মুখ। তার মধ্যে একজন যুবক বলল- আমায় চিনতে পারছেন ডাক্তারসাহাব? আমি মহম্মদ আমীর।
প্রহ্লাদ তাকে দেখে কোন সায় দিলনা।
যুবকটি বলে চলল - 'না চেনারই কথা আপনার। আমার মানিব্যাগ আর মোবাইলটা সেদিন পকেটমারি হয়ে গেছিল। ট্রেনে করে বাড়ি ফিরবো টাকা ছিলনা। সবার কাছে টাকা ভিক্ষা করছিলাম। বি.আর.সিং হসপিটালের সামনে আপনি এলেন। অনেক প্রশ্ন করলেন। আর আমায় একশো টাকা দিয়ে বলেছিলেন, দেখো যুগ যেরকম সেরকম হতে হবে। এই যে দেখো আমি ওই এন.আর.এস এর ডাক্তার কিন্তু আমি মানিব্যাগ ইউজ করিনা। এই পকেটে কিছু টাকা, ওই পকেটে কিছু রেখে দিই, যাতে একটা পকেট কাটা গেলেও চাপ না হয়।'
প্রহ্লাদ বললো - হ্যাঁ মনে পড়েছে।
আমীরের বাড়িতেই প্রহ্লাদের থাকার ব্যবস্থা হয়ে গেল। প্রহ্লাদ রোজ ঘুরে ঘুরে বেড়াত লাঠি আর ভিক্ষার ঝুলি হাতে । এসে আমীরের সাথে কোরান নিয়ে আলোচনা করত। নিজে কিছু রান্না করে খেত। ধ্যানে প্রহ্লাদ ডিবেট করতো নিজের সাথে -সব ধর্মের প্রচারক বলে গেছেন তার কথা না মানলে অধ:পাত নিশ্চিত। সেই অতীতে বুদ্ধদেব আর এই কালে রামকৃষ্ণদেব শুধু বলেছেন, তোমার পথ আলাদা হলেও তুমি ভুল নও। সব পথই রোম নগরীর দিকে যায়। পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষ কাজ করে একটা রিটার্নের আশা থেকে,স্বার্থ থেকে। বাবা-মা কেউ বাদ যায় না। সেই আশাপূরণ না হলেই মানুষ খারাপ প্রতিপন্ন হয়। অন্যকে খারাপ দেখিয়ে মনে হতাশা আসে। সংসারের অনিত্য থেকে উতপন্ন অশান্তি সবাইকে তাই আধাত্ম্যতৃষ্ণার পথেই নিয়ে যাবে। কাউকে আগে, কাউকে পরে। মানুষ যেই দেখলো কেউ নতুন পথ দেখাচ্ছেন। তাদেরকেই মূর্তি বানিয়ে পূজা করতে লাগলো।
মানুষের মন বড় দুর্বল, ভীরু। সে সবসময় কিছু অবলম্বন চায়। সে তাই চিন্ময়ীকে মৃণ্ময়ীতে খোঁজে। একদিন অশান্ত প্রহ্লাদ কালীমূর্তির সামনে বিষের জ্বালায় যেরকম ছটপট করে সেরকম ছটপট করছিল। কিন্তু তার মৃণ্ময়ী কিছুতেই শান্তি দিতে পারছিল না। তখন এক লাথি মেরে ভেংগে দিয়েছিল। পড়েছিল কিছু মাটির টুকরো।

এভাবে বিতর্ক চলতে লাগলো তার মনে। তার মনে অজস্রচিন্তারাশি কামারের হাতুড়ির মত আঘাত করতে লাগলো। তার মাথায় লাগছিল। চিনচিন করে কানের কাছে শব্দ হচ্ছিল। অনেকক্ষণ বিতর্কের পর তার মনে হল তার মন কামনা আর হিংসা থেকে মুক্ত। এক অনাস্বাদিত আনন্দে সে উদ্বেল হল। তার মনে সন্তুষ্টি এল।
এদিকে শ্যামলবাবু ছেলে নিখোঁজ হওয়ার শোকে বিহ্বল হলেন। সে মোবাইলটাও বাড়িতে রেখে গেছে। যোগাযোগের কোন উপায় নেই। শ্যামলবাবুর স্ত্রী খবর শুনে তার বাড়িতে এলেন। একটা দীর্ঘ বিরহের অবসান হল। তারা ঠিক করলেন ছেলে ফিরে এলে আর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না। তার এক্স গার্লফ্রেন্ড এর সাথেও তাদের এখন ভালো ভাবে কথা শুরু হয়েছে। বাড়ি ছাড়ার আগে তার সাথেই শেষ যোগাযোগ করেছিল। তাই সেই একমাত্র উপায় ছেলেকে ধরে রাখার। ও ফিরে এলে ওই গার্ল্ফ্রেন্ড সুচরিতার সাথেই বিয়ে দেওয়া হবে।
অগত্যা পেপারে বিজ্ঞাপন দেওয়া হল। ইতিমধ্যে আমীরের চোখে সেই বিজ্ঞাপন পড়েছে। আমীর প্রহ্লাদ যাতে বাড়ি ফিরে যায় সেই উদ্দেশ্যে গোপনে যোগাযোগ করলো শ্যামলবাবুর সাথে। শ্যামলবাবুর চিন্তা হল তিনি নিজে যদি যান ছেলের যা জেদ জোর করে ধরে আনলে, অনিচ্ছা থাকলেও হয়তো ফিরে আসবে,কিন্তু আবার পালাতে পারে। তাই তিনি প্রহ্লাদের এক অনেকদিনের বন্ধু নবারুণ, তার মামা আর তার দুই দাদা কে পাঠালেন। তাদের বললেন ওরা একসাথে গেলেও ও যে ঘরে থাকবে কথা বলতে একসাথে যেন না যায়, একে একে যায়। প্রথমে মামা, তারপর দুই দাদা, তারপর বন্ধু। দরকারে সুচরিতার সাথে কথাও বলানো যেতে পারে যাতে মন গলে। বন্ধু বলল - আপনি কোন চিন্তা করবেন না কাকু, ওর মাথার ভূত তাড়ানোর ওঝা আমি।
প্রথমে মামা গেল তার কাছে।
মামা প্রহ্লাদের বক্তব্য শুনে বলল - তুই দেখ্ এই বসন্তকাল পরিবেশে যে মত্ততা সৃষ্টি করে তা কি শুধু পাখিদের জন্যই ? চিন্তার অযোগ্য বিষয় নিয়ে তুই চিন্তা করছিস। যেগুলো নিয়ে ভাবার সেগুলো নিয়েই ভাবছিস না। তোর চুলের যা অবস্থা অপজিট সেক্স আট্রাক্টেড হবে কি করে ?
প্রহ্লাদ বললো - সবাই একই জিনিস নিয়ে ভাবলে নিউটন ও মাতাল হয়ে লুংগি তুলে হানি সিংর গানে ডিস্কোতে নাচতো। আপেল থেকে অভিকর্ষ আবিষ্কার হতনা।
মামা -
হ্যাঁ কিন্তু অভিকর্ষ নিয়ে না ভেবে নিউটন তো এটা নিয়ে ভাবেন নি, যে আপেল কেন গোল।
প্রহ্লাদ বললো - হ্যাঁ আপেলের সেপ টা কেন আপেলের মত হল এটাও একটা গবেষণার বিষয় বটে।
মামা বুঝলেন, এ রোগ সারানো তার সাধ্যের বাইরে, তাই বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে।
তার দুই দাদা এসে দুই পাশে বসল।
এক দাদা বললো - দেখ্ আমি তোর বন্ধুর মত। অমংগল থেকে নিবৃত্ত করা, মংগলজনক ব্যাপারে গাইড করা আর বিপদে ত্যাগ না করা আমাদের কর্তব্য। বন্ধু হিসেবে বলছি, মেয়েদের প্রতি উদাসীনতা তোর যোগ্য নয়। সৌজন্য আর অনুরাগের সংগে ওদের গ্রহণ করতে হয়। অনেক বাউল রা তো সংসার করে। কিন্তু তারাও দেহতত্ত্বের সাধনা করে। কামই শ্রেষ্ঠ। ইন্দ্রও পরস্ত্রী অহল্যাকে কামনা করেছিলেন। অনুরাগের বশে পরাশর কালীকে সম্ভোগ করেছিলেন। মুনি বশিষ্ঠ রমণের ইচ্ছায় চন্ডালকন্যা অংগমালার সাথে মিলিত হয়েছিলেন। স্ত্রী সংসর্গ প্রাণান্তকারী জেনেও পান্ডু মাদ্রীর সাথে কামজ সুখ ভোগ করেছিলেন। সত্য আপেক্ষিক। এই যে বিশ্বব্রম্ভান্ড এও পরম সত্য নয়। পরম সত্য বলে কিছু নেই। কামই সত্য। এছাড়া আর কোন সত্য নেই। মুনি ঋষি, দেবতা, সবাই, এই জগত কামে অনুরক্ত। আর তুই? হ্যাঁ তোর আগেও, সদ্য একটা রিলেশন কাজ করেনি। অনিচ্ছা আসবে স্বাভাবিক।তা সত্ত্বেও ডেট কর। ছল করেও মেয়ে পটা। দেখবি কাউকে সত্যি ভালো লেগে যাবে।
প্রহ্লাদ বললে - এই জগত অনিত্য। পৃথিবী যদি উলটো দিকে ঘুরত তাহলে সূর্য পশ্চিমদিকে উঠতো। তাই যা কিছু আমরা জানি সবই অনিত্য, পরম সত্য নয়। আমি সেই সত্যের সন্ধান করছি। সাধারণের মতই যাদের পতন হয়, বিষয়ে যাদের আসক্তি রয়েছে কিংবা আত্ম-সংযমের সাথে যাদের যোগ নেই, তাদের মাহাত্ম্য আছে - এরূপ আমি মনে করিনা। তুমি বলছ - ছল করেও মেয়েদের পটিয়ে নিতে। কিন্তু কারো আনুকূল্যের জন্য কোন কপটতা আমি জানিনা। এই জগতকে যেন অগ্নিতে জ্বলন্ত দেখতে পাচ্ছি।
তোমরা এখন যাও। কাল কথা বলবো আবার। এই জগত প্রকৃতই দু:খের। এই দু:খের থেকে মুক্তির উপায় বের করে আমি প্রচার করবো।
এই বলে প্রহ্লাদ সামনের নীমগাছের তলায় ধ্যান করতে গেল। নীমগাছের পাতাগুলো চঞ্চল, মনোহর। সে উপলব্ধি করলো এত বছর ধরে সে মনের শান্তি পেতে যে বিবেকজনিত বিতর্কমূলক ধ্যান করতো তাতে মন যে শান্তি লাভ করতো সেটা আসলে মুক্তি নয়। এতে সন্তুষ্ট হলে চলবেনা। বিতর্ক চিত্তে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। তাই এই সমাধি কখনো পরম সত্যর পথে নিয়ে যেতে পারেনা। এতে সন্তুষ্ট হয়ে থাকলে তার শরীরধর্মী আত্মা আবার বিষয়, ইন্ধ্রিয় সুখে আকৃষ্ট হবে। এর উর্ধ্বে তাকে যেতে হবে। পরের দিন সকাল হল। জগতের চক্ষু সূর্য উদিত হল। আর প্রহ্লাদও উদীয়মান সূর্যের মত গাছের তলা থেকে উঠে এল। তার দেহ শীর্ণকায়, কিন্তু চোখে মুখে উজ্জ্বল দীপ্তি। সে বিতর্কহীন ও প্রীতিসুখযুক্ত এক মানসিক অবস্থা লাভ করেছে।
সে তার দুই দাদাকে ডেকে বললে - বাবা-মা কে বলবে শোকাচ্ছন্ন না হতে। জগত থেকে বিচ্ছেদ যখন ধ্রুব সত্য, তখন ধর্মের জন্য নিজেই বিচ্ছেদ ঘটানো সংগত। আমি যে গুণহীন সে কথাও বলবে। গুণহীনতার জন্য লোকে স্নেহ ত্যাগ করে। স্নেহত্যাগ করলে আর শোক আসেনা।
মামা হঠাত রেগে এসে বললো - উচ্ছৃংখল ছেলের মত তুই সবাইকে ত্যাগ করতে পারিসনা।
একজন দাদা মামাকে সামলালো।
প্রহ্লাদ নির্বিকার চিত্তে বললো - বড় কোন প্রশ্নের উত্তর পেতে ত্যাগ তো করতেই হবে।আমি যদি স্নেহের বশে স্বজনকে না ছাড়ি, তাহলে মৃত্যু আমাদের ছাড়িয়ে দেবে। মেঘগুলো যেমন মিলিত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়, বিশাল মহাসমুদ্রে হিমশৈলরা যেরকম, প্রাণীদের মিলন- বিচ্ছেদ ও সেরকম। বাবা-মার সন্তাপের কারণ আমি নই। অজ্ঞানবশত:ই এই দু:খ। গৃহকোণ, বন্ধুর মায়া ছেড়ে আমি মুক্ত - সেই বন্ধনে আমি আর প্রবেশ করতে চাইনা। এই বন্ধন শুধুই দু:খের কারণ। আমরা সবাই কোন না কোন মত, ব্যক্তি, দল, ধর্ম তে বায়াসড্। আমি সব রকম বায়াসনেসের উর্ধ্বে যে সত্য আছে সেই সত্যকে জানতে চাই।
এতক্ষণ নবারুণ চুপ করে সব শুনছিল। সে চালাক ছেলে। জানে কখন কিভাবে কথা বলতে হয়।এবার সে মুখ খুলল -
দেখ্ ভাই, তুই দিন দিন বড় বাল হয়ে যাচ্ছিস। আমরা যে কুল ডিউড রকস্টারকে চিনি, এই কি সেই। আধুনিক চিন্তায় গড়া তুই প্রাচীনকালে ফিরে গেলি। যাই হোক, তোর একটাও কথা অযৌক্তিক নয়, তবে কালোচিতও নয়। রাম ও তার পিতার আদেশ মেনেছিলেন। রাম তার স্ত্রী সীতাকে ত্যাগ করে বনবাসে যায়নি। আগেও জীবনের অনেকগুলো ধাপ ছিল। ব্রম্ভচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ, সন্ন্যাস। যে বয়সে যেটা মানায়। তুই বুড়ো হ। ভিক্ষা করে তুই যথাসময়ে ধর্মপালন করবি। যৌবন ধর্ম ও অর্থের শত্রু। ধর্ম যত্নে রক্ষিত হলেও একে ধারণ করা কঠিন। কারণ কামনা বিষয়ভোগের পথে তাকে আকর্ষণ করে। জীর্ণ বয়স বিচার পরায়ণ, ধীর ও স্থিতিশীল। গতি না থাকায় সমাজের কাছে লজ্জায় অল্প যত্নেই শান্ত স্বভাব লাভ করে। তুই যে সবের কথা বলছিস সেগুলো এই চঞ্চল, বিষয়প্রধান, প্রমত্ত, অদূরদর্শী ও বহু ছলনাময় যৌবনে মানায় না।
প্রহ্লাদ এবার কি যেন চিন্তা করে গম্ভীর অথচ শান্ত কন্ঠে বলা শুরু করল - আগুন কাঠে তৃপ্ত হয়না, তৃষ্ণাযুক্ত ব্যক্তির তেমনি বিষয়ভোগে তৃপ্তি নেই। ভোগ্য বিষয়গুলি জগতে অনিত্য। এই সত্যকে জেনে কোন্ জ্ঞানী ব্যাক্তি অনর্থ চাইবে ? দারুণ যত্নে যা পাওয়া যায় আর ক্ষণকালের মধ্যেই তা নষ্ট হয় সবই স্বপ্নলব্ধ ভোগের মত। বিষয় দু:খ প্রতিকারের নিমিত্ত মাত্র। একে 'ভোগ' বলা যায় না। যে বস্তুগুলি প্রথমে সুখ দান করে, সেগুলিই আবার দু:খ বহন করে আনে। সোয়েটার, জ্যাকেট শীতকালে আরামদায়ক, গ্রীষ্মকালে অস্বস্তির কারণ। কেউ একান্তভাবে সুখী বা দুখী নয়। কোন বড়লোক সব সময় হাসেন না, কোন গরীব সব সময় হতাশ হননা। এইসব অনিত্যতার মিশ্রণ দেখে আমার সব মিথ্যা মনে হয়। মুকেশ আম্বানিও একটা বাড়িতেই থাকতে পারে। রাতে যখন সে ঘুমায় সে একটা ঘরই ভোগ করতে পারে। কোন স্বামী তার স্ত্রীর মনের একটা খোপেই স্থান পায়। ডাক্তার হয়ে টাকা ইনকাম করা পরার্থে শ্রম ছাড়া আর কিছু নয়। যা কিছু প্রয়োজনের থেকে বেশি তা কেবল অহংকারের জন্য। কন্টেন্টমেন্ট থাকলে সব কিছুই তুচ্ছ মনে হয়। যে অন্ধ না হয়েও অন্ধ হতে চায়, মুক্ত হয়েও বদ্ধ হতে চায় সেই বিষয়ী হতে ইচ্ছে করে। তুই বললি, বুড়ো হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে। নবীন বয়সে চিত্তের বিকার হয়। এটাও অনিশ্চিত। প্রায়ই দেখা যায় জরায় অধীরতা, যৌবনে ধৈর্য থাকে। যখন মৃত্যু বাচ্চা- বুড়ো সবাইকেই সমান ভাবে ডেকে নেয়, তাহলে একজন জ্ঞানী কিভাবে বার্ধক্যের প্রতীক্ষা করবে ? তুই আমার বন্ধু হয়ে কি করে আমায় উতসাহ না দিয়ে এরকম কথা বলে ডিমোটিভেট করছিস? এই পৃথিবীটা আসলে বন্ধুসুলভ দৈত্যতে পরিপূর্ণ, আর দেবদূতরা ক্ষত নিয়ে।

এতটা বলে প্রহ্লাদ চুপ করল। এর পর কিছু বলা মানে পন্ডশ্রম।
সে রাতে প্রহ্লাদ ধ্যানে বসলো। সে যেন বুঝতে পারলো এটাই মুক্তি নয়। কারণ আজ বিকেলে ফোনে তার মা, সুচরিতার কান্না শুনে তার মন বিষাদগ্রস্ত। সে আরও উচ্চতর স্তরের উদ্দেশ্য নিয়ে নিজের ঘরের মেঝেতে ধ্যানে বসলো । একের পর এক স্তর অতিক্রম করে প্রহ্লাদ যখন চোখ খুললো তখন সকাল হয়েছে।
শেষ চেষ্টা করার জন্য তার দাদা সুচরিতার সাথে কথা বলালো। আগের দিন আপত্তি করেছিল প্রহ্লাদ তার মনে ভয় ছিল সে গলে যেতে পারে। আজ নির্ভয়ে, নিসংকোচে ফোন কানে নিল প্রহ্লাদ।
ও পাশ থেকে অনেক কান্নাকাটির পর প্রহ্লাদকে নির্বিকার দেখে বললো -তুমি অনেকদিন বলছিলে দেখা করবে। তোমার সাথে অনেক দিন দেখা হয়নি চল দেখা করে আমাদের পুরানো মূহুর্তগুলোতে ফিরে যাই।

প্রহ্লাদ বললো, না আসলে কিছুই নেই। সব কিছুই ভ্রম। ইলিউশন। কিছুই আসলে হচ্ছেনা, সবই ভ্রম।
এরপর একদিন সে আবার বেরোল নিরুদ্দেশের পথে। আমীরের বাড়ি ছেড়ে।
একজায়গায় এসে অসাধারণ শাস্ত্রীয় সংগীত শুনে সে থেমে গেল।
তার এক বছর পরের কথা। একটা স্টেজ। যেখানে প্রহ্লাদ একটা তানপুরা নিয়ে বসে। এক পাশে সেতার বাদক। আর এক পাশে পাখোয়াজ। শোনা যায় প্রহ্লাদ একদিন ঘুরতে ঘুরতে এক সংগীতবিশারদের বাড়িতে উঠেছিল। সেখানে এক বছর শাস্ত্রীয় সংগীত শিখে আজ প্রথম গাইতে উঠেছে। অনেক দর্শকদের মধ্যে একজন শ্যামল বাবু, আর একজন তার বন্ধু
সাইকিয়াট্রিস্ট এবং এক বছর ধরে প্রহ্লাদের চিকিতসক। এক বছর আগে প্রহ্লাদের সিজোফ্রেনিয়া রোগ হয়েছে তিনিই বলেছিলেন। তারপর থেকে তাঁর কাছেই চিকিতসাধীন। আসলে ওই সংগীত বিশারদ আর কেউ না ওই সাইক্রিয়াটিস্ট নিজেই ছিলেন। মঞ্চে প্রহ্লাদ গান ধরে উঠলো- 'মন চল নিজ নিকেতনে।'
সাইক্রিয়াটিস্টের মুখের এক কোণে বাঁকা হাসি ফুটে উঠলো। প্রহ্লাদকে বুঝিয়েছিলেন তিনি, তখন - এ সংসারে যারা তৃষ্ণার্ত তাদের জন্য এ সংসারে থেকে তোমার কন্ঠ হতে গানের আলো বিকিরণ হোক। অবসেসন না থাকলেই হল। Desire must be there . Without desire of breathing life doesn't exist . But desire to be harmful and লাক্সারিয়াস হওয়া shouldn't be that path, দ্যাট লিড্স towards supreme wisdom .. নিজের ফুলের সুগন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে দাও।
গান শেষ হল। সবাই উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি তে ভূষিত করছে গায়ক কে। হাততালি দিতে দিতে পাশে শ্যামলবাবুকে তিনি বললেন - 'কিছু পাগলামি না সারানোই খুব ভালো।'

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...