Thursday, March 9, 2017

প্রথম সন্ধ্যে

নিমগাছের উপর বসে ফেসবুক করছিল একটা ভূত। নাম ক্ষিতি। তার বহদিনের শখ ছিল সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পাওয়ার। অনেক ঠকে শেষে একজনকে বিয়ে করলো। কিন্তু তাকেও যেদিন দেখলো সে অন্যদের সাথে ফ্লার্ট করছে বাধ্য হয়ে ঠিক করলো সুইসাইড করবে। কিভাবে মরলে সব থেকে কম ব্যথা পাবে এই ভাবছিল। পাহাড়ের খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। ভাবত কেউ যদি পিছু ডাকে সে ফিরে আসবে ভালোবাসার লোভে। ট্রেনলাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো যদি কোন নারী তাকে টেনে সরিয়ে দেয়। তার কাছে ভালোবাসার ভিক্ষা চাইবে। এরকম একদিন ময়দানে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ভিক্টোরিয়া কে দেখছিল সে, উপর থেকে বাজ পড়ল মাথায়। তারপর থেকে তার ঠাঁই হল এই নিমগাছে। ফেসবুক সার্চে গিয়ে সার্চ করলো তার বউ এর প্রোফাইল। দেখলো নতুন বিয়ে করেছে। হাজব্রান্ডের সাথে ডিপি। ক্ষিতি এখন ব্যানড্। মোবাইলটায় চালালো শ্যামাসংগীত।' ভেবে দেখ মন কেউ কারো নয়।' ডিপি পরিবর্তন করে শাহুরুখের 'কাল হো না হো' র ছবি লাগালো। কাল হো না হো র ভিডিও টার সাথে নিজের মিল পেল। পা দিয়ে নাচাচ্ছিল নিমগাছের ডালটা। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া হাওয়া তাকে জানিয়ে দিচ্ছিল যে সেও তার মতই বিষণ্ণ। এমন সময় হঠাত একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এল। কুহকিনী সান্যাল। দারুণ দেখতে। আক্সেপ্ট করতেই ক্ষিতির ডিপি লাইক করলো কুহকিনী। ক্ষিতি মেসেজ পাঠালো।
'হাই আমি ক্ষিতি। নাম তো শুনেই থাকবে। '
সেই শুরু। একমাস কেটে গেছে। তারা এখন অনলাইন রিলেশনসিপে। কিন্তু কিছুতেই দেখা হচ্ছে না। যেদিন ক্ষিতি বলে দেখা করবে, সেদিন মেয়েটি বলে তার কাজ। যেদিন মেয়েটির হয়, ক্ষিতির হয়না। হয়না মানে ক্ষিতির কাজ তো কিছু নেই। নিজের মুন্ডু খুলে চোখের কোটরে আংগুল ঢুকিয়ে সুড়সুড়ি দেওয়া ছাড়া। তবু শেষ মূহুর্তে এসে ভাবে ও তো একজন মানুষ, পঞ্চভূতে গড়া একজন রক্ত মাংসের। আমি তো ভূত।ছদ্মবেশ ধরেও কতদিন আর চলবে। কিন্তু আজ ক্ষিতি ঠিক
করে নিয়েছে। এভাবে তো চলতে পারেনা। অনলাইন। এবার দেখা করতেই হবে। ও যদি সত্যি জেনে ক্ষিতির সাথে থাকে তো ভালো। নাহলে নেই। নেই তো নেই।
মেয়েটিকে বললো - আমি আজ বেরোচ্ছি। নন্দনে আকাদেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে সন্ধ্যে সাড়ে ছটায় অপেক্ষা করবো। তুমি যদি না আসো আমাদের ব্রেক আপ।
খুব খুশি ক্ষিতি। আসার সময়েই দেখে নিয়েছে মেয়েটি মেসেজ পাঠিয়েছে - আসছি।
সন্ধ্যেটা নেমেছে রাস্তায় লোকজন কমছে। হালকা কুয়াশায় আত্মগোপন করা খুব সোজা। তারপর সে এল। এসেই ক্ষিতি কে বলল - চিনতে পারছ? এবার শান্তি ?
ক্ষিতি একগাল হেসে বললো - চলো ময়দানের দিকে যাওয়া যাক।
- সে কি এই সন্ধ্যেতে ওদিকটা তো নির্জন।
- হ্যাঁ তাহলেই তো সুবিধে আমার।
বলেই ক্ষিতি জিভ কাটলো। ও বলেছে অন্য মানেতে। মেয়েটি ভেবেছে অন্য মানে তে। দেখলো মেয়েটির গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। যাক একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। জড়তা তো কাটলো এতে।
পাশাপাশি হাঁটছিল দুজন। এলিয়ট পার্কের পাশের ফুটপাথে এসে ক্ষিতি পেছন থেকে মেয়েটিকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো তারপরে পেছন দিকে হঠাত চোখ পড়তেই একহাত দূরে ছিটকে গেল ক্ষিতি - "একি।
তো - তোমার ছায়া পড়ছে না কেন? তা - তার মানে তুমি? তুমিও.... "
মেয়েটি নির্লিপ্ত হয়ে তার কাছে এগিয়ে এসে গলায় দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো - 'জানো তো একটা কথা আছে, ট্রু লাভ ইজ লাইক ঘোস্ট। এভরিবডি টক্স্ আবাউট, বাট নোবডি হ্যাজ সিন।'
কুয়াশাটা আরো ঘন হল।

Wednesday, March 1, 2017

আমাদের ব্যান্ডের গল্প

কি নাম দেওয়া যায় ? একজন বন্ধু মজা করে বললো, 'বিছুটি' দাও। ক্যাকটাস যদি ব্যান্ডের নাম হতে পারে। বিছুটিও হতে পারে।
কবিতা লিখতাম দুজনেই , কিন্তু গান লিখবো কখনো ভাবিনি। ভেতরে রবিবাসরীয় কবিতা গুলো জমছিলো চেপে চেপে। সেগুলো সুরের ভেলা চেপে গান হয়ে গেল। তারপর থেকে বাথরুম, গড়ের মাঠ থেকে ফেয়ারওয়েল ফাংশান হঠাত ফোন আসতো,
' দাদা, এসো। মাথায় একটা সুর এসেছে। '
জয়ন্ত না থাকলে আমি রুমের বাইরে কখনো গাইতাম না।
তারপর অনেকদিনের গ্যাপ।  আজকেই আমি এটা লিখছিলাম পোস্ট করবো বলে, দেখলাম জয়ন্ত তার আগে পোস্ট করেছে।
 হয়তো খুব শিগ্রি ফিরছি। আমরা একসাথে। আমাদের ডায়েরিতে এখনো অনেক অপ্রকাশিত গান, মাথায় অনেক জমে থাকা কবিতা, আর আমাদের চারিদিকে অসংখ্য সুর।
এনট্রপি বাড়ছে, গোলা- গুলি - সন্ত্রাস-ঘৃণা। একটাই জিনিস এগুলো জয় করতে পারে। গান।
আমরা তাই গানে বেশি ক্যাওস রাখিনা। আমি একটু হলেও রকের পক্ষপাতী। জয়ন্ত সেটাও নয়। এরকমও হয়েছে আমি একটা জায়গায় একরকম সুর চাইছি, জয়ন্ত একরকম। সেই ঝগড়াগুলো মিস করছি। প্রত্যেকটা গানের সংগে প্রচুর স্মৃতি জড়িয়ে।

ছোট্টবেলার স্বপ্ন হাজার,
হারিয়ে যাওয়া কত কবিতা,
আকাশ থেকে নেমে আসা,
কত সোনালী রোদ্দুর,
তাই ফিরে এলাম তোর কাছে,
তোকে আমার বলার আছে।

ফিরতে তো হবেই।

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...