Sunday, July 29, 2018

জিহাদ

" বন্ধুরা, সময় এসেছে আমাদের উপর যা অন্যায়, অবিচার হয়েছে তার জবাব দেওয়ার। আমাদের মধ্যে দুজন জিহাদি এখুনি রওনা দেবেন যকৃতের উদ্দেশে...."

সভায় চলছিল কিছু টিউমার সেলের মহান নেতার ভাষণ। আমরা এখন দুজন শ্রোতার কাছে যাব।।দুজনেই সচেতন স্যাম্পলিং এর শিকার।
একজন বললো
 - উফ্, এরকম গায়ের উপর চাপাচাপি করার স্বভাব গেলনা, না??
 - দোস্ত, এটা কি কথা, জন্মেছি ক্যান্সার সেল হয়ে, আমাদের এই বস্তিতে ভালোভাবে বেড়ে ওঠার তো নিয়ম নাই। উদ্বাস্তু হয়ে গায়ের উপর চাপাচাপি করেই তো বাঁচতে হবে।
 - চুপ কর্, আমাদের মহান নেতা আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছেন।
 - হ্যাঁ, জানি বলির পাঁঠা আমাদেরকেই বানাবে।কুফার সেলের নাম শুনেছিস?? আমাদেরকে গিলবে বলে বসে আছে।
 - এই চুপ, আমাদেরকে মহান নেতা উৎসেচকের টিকা পড়াতে আসছেন।

মহান নেতা এসে বললেন দুজনকে,
 "বন্ধুরা , এটা ধর্ম রক্ষার যুদ্ধ। এতদিন ওদের টি-সেল আমাদের মারতো। এবার আমরা এর জবাব দেব। পথে যেতে যেতে কোন টি-সেলের হাতে যদি আপনাদের মৃত্যু হয়, তাহলে মনে রাখবেন আমরা যখন গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাব, সেই সোনার দিনে আপনাদের এই বলিদান সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। আপনারা ওখানে দেখে সিগন্যাল পাঠালেই আমাদের অস্ত্র মিছিল যকৃত কলোনি তে পৌঁছে যাবে। জয় টিউমার"

- জয় টিউমার। জয় টিউমার।

 টিউমার সেল ভাইদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দুই দোস্ত এগিয়ে গেল কোলাজেন সীমান্তের দিকে। একজন আরেকজন কে জিজ্ঞেস করলো।

 - দোস্ত এই জিহাদে কার লাভ??
 - মানে?
 - মানে জানিসনা??  ধর যদি পথে আমার মৃত্যু হয়, তখন আমার কাছে তো এই দুনিয়া শেষ।
 - হ্যাঁ, কিন্তু তার সুফল পাবে আমাদের পরের প্রজন্ম।
 - কিন্তু দোস্ত আমরা যদি চারিদিকে ছড়িয়ে যাই, তখন আমরা সেই মরা দেশের রাজা হয়ে কি করব ??

 দুজনের মধ্যে নীরব কুয়াশা নেমে এল।তাকে ভেদ করার ক্ষমতা দুজনের কারোরই ছিলনা। সামনেই দেখা যাচ্ছে রক্তবাহের লাল আভা।এপিথেলিয়াল লেয়ার পেরোলেই দুই বন্ধু ঢুকে পড়বে রক্তস্রোতে।।

No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...