Saturday, February 5, 2022

In memory of

 অঙ্কের যোগফল এখন শূন্য দশমিক শূন্য।

আগে পরে কিচ্ছু নেই। 

একটাই মানুষ ছিল,

যেভাবেই হোক বেঁচে ছিল,

সেও রইল না। 

আমার মৃত কফিনে শেষ পেরেক মারা হল। 

এই পৃথিবীর জনসংখ্যা আমার চোখে শূন্য।

আমি মাটিতে আছাড় খেলাম।

দেখলাম কত লোক গিজগিজ করছে। 

আমি তাদের মাঝে অতি সামান্য, অতি সাধারণ। 

আমাকেও তাদের মাঝে একটু মুখ তুলে-

বাঁচতে হবে পোকা মাকড়ের মতো।

ভোর রাতে ঘুম ভেঙে -

ছাদে উঠে,

ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকলাম,

শবদাহ করার বাঁশ বাগানে,

খালের পারে,

কেউ নেই - মৃত্যুর পরে সব শেষ।

সব হিসেব নিকেশ, 

প্রাপ্তির খেলা। 

কয়েকমাস আগেও নিজেকে -

কতকিছু ভেবেছি। 

আজ আমি নিঃস্ব, শূন্য। 

ওই কম্পাংকের রেডিও চ্যানেল নেই আর।

একদিন কেউ থাকবেনা সবাই জানে,

সবাইকে কালের নিয়মে ঘুমাতে হবে।

তবুও সবার কিছু মানুষ থাকে জীবিত,

যাদের অহংকার একে অপরের দ্বারা প্রভাবিত।

এই পোকার মত জীবনকে নিয়ে, 

এত গর্ব কে করেছে আর আমায় নিয়ে? 

এত সম্মান কে দিয়েছে? 

এত স্নেহ, ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছে আর কে? 

কে আর দিয়েছে,

এত নিঃস্বার্থভাবে আমার জিজ্ঞাসা কে আস্কারা?

আমায় দেখলে তোমার বার্ধক্যে -

চঞ্চলতা জাগতো। 

তুমি একজন বিশেষ কেউ, 

এই বিশেষণে ভূষিত করা খুব সোজা। 

কিন্তু এভাবে অনুভব করাতে যে পারে, 

সে সত্যি বিশেষ কেউ।

এ জীবনের দাম ঠিক কতখানি। 

এত ভাবার সময় নেই যে আর।

ভেবে কার সাথে কথা হবে? 

স্বপ্নের পালে হাওয়া দেওয়ার লোক নেই,

ভালোবাসা নেই তো বহুমাস হল। 

ভালোবাসার চাহিদাও গলা টিপে খুন

মিথ্যে স্বপ্ন গুলোও আজ মুখ থুবড়ে -

পচা ডোবায় বুদবুদ তৈরি করছে। 

এর আগেও মানুষ মারা গেছে, 

নিজের রক্তের, বন্ধুর মতো অনেক মানুষ।

খারাপ লেগেছে। 

আবার চলেছে জীবন নিজের মত। 

কিন্তু এই মৃত্যু একদম আলাদা।

মৃত্যুর দুদিন আগে থেকে আমি ঘুমহীন, 

কি যেন খারাপ হবে। 

কিছু একটা খারাপ হবে। 

নষ্ট এই পৃথিবীর বুকে নিজেকে-

 শক্ত খোলসে ঢেকে রাখতে হয়।

আমার ভেতরে লুকিয়ে ছিলে তুমি-

আর তোমার নরম সত্যযুগ। 

কিভাবে বুঝতে পেরেছিলাম জানিনা।

মন অস্থির ছিল। 

ঘুম অপ্রতুল।

এরকম আমার তো হয়না৷ 

অনেক বড় হয়েছি। 

আর বুক কাঁপেনা।

আর ভাঙিনা।

যে ঠিকানা আমায় ব্রাত্য করেছে,

চোখে মুখে যেখানে ঘৃণা -

সেখানে আর হাত বাড়িয়ে ভিক্ষা করিনা। 

তবুও হাতড়েছি হাত ওই দিন,

যেখানে সেখানে অন্ধকারে। 

হঠাৎ করে নিজেকে অপ্রস্তুত লেগেছে।

বুঝতে পারছিলাম না কি হতে পারে।

এমন কিছুও কি হতে পারে, 

যার পর সব স্বপ্ন অর্থহীন লাগে?

বিজ্ঞান বলে প্রোটন, নিউট্রন ও ভাঙতে পারে, 

তারও পরেও নাকি ভাঙা যায়।

কিন্তু এমন ভাবে কি কেউ ভাঙতে পারে,

যার পর আর ভাঙা যায়না। 

টেনিসন যখন আর্থারকে হারিয়েছিল। 

রবীন্দ্রনাথ কাদম্বরী দেবীকে। 

আমার স্বপ্নগুলো নিয়ে লালন করার পর

কার হাতে তুলে দিলে সে ওই ভাবে -

তৃপ্তির হাসি হাসবে৷

যখন একটু ভালো করে গান গাইতে শিখলাম,

তখন তুমি শুনতে পেলেনা।

না আমি তোমার ছবি দেওয়ালে টাঙিয়ে, 

পেছনে টিকটিকির ডিম পাড়ার জায়গা বানাবোনা।

তোমাকে জীবন্ত চাই। 

এ জন্মে সেটা আর হবেনা।

আমার এর পরে যত জন্ম থাকে, 

সব জন্মের শুরু থেকে শেষ,

তোমার আবেশে যেন স্বপ্ন দেখতে শিখি।

সাধারণ আমাকে আর যে কটা দিন -

এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হবে, 

সে কটা দিন মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাবে,

ভোররাতে অসহায় হয়ে তাকিয়ে থাকবো -

তোমার দেওয়া বইগুলোর দিকে।

আর অসাধারণ স্বপ্ন দেখা আমার সাজেনা।

বস্তুবাদের স্রোতে যেদিকে নিয়ে যাবে-

সেদিকে গুটি গুটি পায়ে চলে যাবো।

আমি পঙ্গু যখন ওভাবেই হাঁটা যাক্।। 


No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...