২০২৯ সালের ভারতের লোকসভা নির্বাচন। সব রাজনৈতিক দল তার পছন্দমত প্রার্থী রিসার্চ করে ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। হঠাৎ করে বাজারে খবর এলো, দেশে এক নতুন রাজনৈতিক দল খোলা হয়েছে। পার্টির নাম "প্রকৃতি"। প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন গাছকে টিকিট দেওয়া হবে। পার্টিটির সৃষ্টি কিভাবে হল কেউ জানেনা। কোন বিজ্ঞানী বলছেন, বাইরে থেকে উল্কার সাথে এর আগমন, কেউ বলছেন অশান্ত ঘোলা জলে বজ্র বিদ্যুৎ ও খারাপ আবহাওয়া "প্রকৃতি"র জন্ম দিয়েছে। এমতাবস্থায় আমরা অরিজিন অফ স্পেসিস না খুঁজে মানুষ এই পার্টি কে নিয়ে কি ভাবছে জানতে জনমত সমীক্ষায় বেরোলাম। প্রথমে আমতলা তে গেলাম। সেখানে প্রার্থী আম গাছ। একটি দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম -" এবারের ভোটে আপনাদের কেন্দ্রের প্রার্থী আমগাছকে নিয়ে কি ভাবছেন? "
তিনি বললেন - "আমগাছ হিন্দু না মুসলিম দের পক্ষে সেটা আগে পরিষ্কার করে দিক। তারপর ভাববো। তবে সাধারণ ভোটার হিসেবে আমগাছকে নিয়ে সবাই ভাববে। কারণ আমগাছ ভাষণ দিতে পারেনা। মাইকের শব্দ দূষণ বন্ধ হবে। শুধু অমায়িকভাবে আম দিতে জানে। আমগাছ এর জন্য আমরা নতুন আশা পাচ্ছি।"
আমি মনে মনে স্বগতোক্তি করলাম - আম-আশায় মরে চাষা।
যাই হোক, এবার একজন বামপন্থী দলের সদস্যকে খুঁজে পেলাম। তিনি রণশক্তি পত্রিকা রাস্তার ধারে নোটিসবোর্ডে টাঙানো ছিল, একা একা সেটা পড়ছিলেন। সেই দেখে তাকে শনাক্ত করলাম। হোমো লেফ্ট সেপিএন্স। ওনাকে প্রশ্ন করলাম বিপক্ষের প্রার্থী আমগাছ কে নিয়ে কি ভাবছেন?
তিনি হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে বলতে শুরু করলেন - "যে কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন এ অংশ নিতেই পারে। কিন্তু এবার প্রকৃতি পার্টির প্রার্থী দেওয়া হয়েছে বাম ভোট কাটার জন্য। "
আমি বললাম - "আপনাদের যা ভোটার শতাংশ তাতে এই কথার যুক্তি কি? "
তিনি বললেন - "প্রকৃতি মানে কি? তারা তো কমিউনিজম্ নীতি মেনেই চলে। যদিও ফল জিনিসটা পুঁজিবাদী মানসিকতা। সেই জন্যই বানর, পাখিও আছে যারা সেগুলো লুট করে নেয়। মানুষ আছে যারা কেটে ফেলে। এই প্রকৃতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বেঁচে থাকতে কমিউনিজম্ কত দরকার? তাই যারা কমিউনিজম মানে তাদের অনেক ভোট কাটার জন্য এই দল।"
কাটাকুটি খেলার গল্প শুনে সম্পৃক্ত আমি এবার এক ডানপন্থী দলের নেতার কাছে গেলাম। তিনি বাংলা ভাষা বাঁচানোর জন্য হিন্দীতে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি এই নতুন দল নিয়ে কি চিন্তা করেন?
তিনি বললেন - "ভাইরা এই পার্টি চলবেনা। এই পার্টি ষড়যন্ত্র করে ঝামেলা বাঁধাতে আসছে। এদের কথায় ভুলোনা। এরা এলে গৃহযুদ্ধ আরো বাড়বে। "
সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে পা যখন ক্লান্ত। রাস্তায় একটা অশ্বত্থ গাছের ছায়ায় বসলাম আমরা সবাই। পাখি ডাকছিলো৷ পাশে ছিল বিশাল হ্রদ। এই গাছের ছায়ায় বসে আমার সাথী হঠাৎ বলে উঠলো - অজাত ভুবন ভ্রূণ মাঝে যখন বিলীন হয়েছিনু ওই বিরাট জঠরে, ওই তব অবিশ্রাম কলতান অন্তরে মুদ্রিত হয়ে গেছে।
গাছের কি কোন ধর্ম আছে? গাছের প্রাণ আছে। তারপরেও তারা বেঁচে আছে সেই আদিম যুগ থেকে। সভ্যতার পর সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু এই আদিম সবুজ প্রাণ টিকে রয়েছে সভ্যতার বুকে চুপচাপ। কত অত্যাচার, কত ধ্বংস লীলা -তবু আজো মানুষের ক্ষমতা নেই তাকে ছাড়া বেঁচে থাকার। কারণ গাছ শুধু দিতে জানে। তাদের শরীর ক্ষয় হয়। কিন্তু সেই সবুজ আত্মা কোন এক বীজে অংকুরিত হয় কিশলয় রূপে।
"অজো নিত্যঃ শাশ্বতোহয়োং পুরাণো। ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে।। "
এই আত্মা নিত্য, শাশ্বত ও পুরাতন। শরীর ধ্বংস হলেও একে ধ্বংস করা যায়না।
গাছের ভগবান কে? আল্লাহ্, যীশু না একশো কোটি দেব দেবীর কোন একজন? গাছ মারা গেলে বেহেস্তে যায় নাকি স্বর্গে না হেভেনে যায়? নরকে গরম তেলের কড়াই তে আগুন জ্বালানোর জন্যও তো জ্বালানী হিসেবে গাছকে লাগবে।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর বেশি দূরে নেই।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর "প্রকৃতি" আসছে এ পৃথিবীর ক্ষমতায়৷
তিনি বললেন - "আমগাছ হিন্দু না মুসলিম দের পক্ষে সেটা আগে পরিষ্কার করে দিক। তারপর ভাববো। তবে সাধারণ ভোটার হিসেবে আমগাছকে নিয়ে সবাই ভাববে। কারণ আমগাছ ভাষণ দিতে পারেনা। মাইকের শব্দ দূষণ বন্ধ হবে। শুধু অমায়িকভাবে আম দিতে জানে। আমগাছ এর জন্য আমরা নতুন আশা পাচ্ছি।"
আমি মনে মনে স্বগতোক্তি করলাম - আম-আশায় মরে চাষা।
যাই হোক, এবার একজন বামপন্থী দলের সদস্যকে খুঁজে পেলাম। তিনি রণশক্তি পত্রিকা রাস্তার ধারে নোটিসবোর্ডে টাঙানো ছিল, একা একা সেটা পড়ছিলেন। সেই দেখে তাকে শনাক্ত করলাম। হোমো লেফ্ট সেপিএন্স। ওনাকে প্রশ্ন করলাম বিপক্ষের প্রার্থী আমগাছ কে নিয়ে কি ভাবছেন?
তিনি হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে বলতে শুরু করলেন - "যে কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচন এ অংশ নিতেই পারে। কিন্তু এবার প্রকৃতি পার্টির প্রার্থী দেওয়া হয়েছে বাম ভোট কাটার জন্য। "
আমি বললাম - "আপনাদের যা ভোটার শতাংশ তাতে এই কথার যুক্তি কি? "
তিনি বললেন - "প্রকৃতি মানে কি? তারা তো কমিউনিজম্ নীতি মেনেই চলে। যদিও ফল জিনিসটা পুঁজিবাদী মানসিকতা। সেই জন্যই বানর, পাখিও আছে যারা সেগুলো লুট করে নেয়। মানুষ আছে যারা কেটে ফেলে। এই প্রকৃতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বেঁচে থাকতে কমিউনিজম্ কত দরকার? তাই যারা কমিউনিজম মানে তাদের অনেক ভোট কাটার জন্য এই দল।"
কাটাকুটি খেলার গল্প শুনে সম্পৃক্ত আমি এবার এক ডানপন্থী দলের নেতার কাছে গেলাম। তিনি বাংলা ভাষা বাঁচানোর জন্য হিন্দীতে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তাকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি এই নতুন দল নিয়ে কি চিন্তা করেন?
তিনি বললেন - "ভাইরা এই পার্টি চলবেনা। এই পার্টি ষড়যন্ত্র করে ঝামেলা বাঁধাতে আসছে। এদের কথায় ভুলোনা। এরা এলে গৃহযুদ্ধ আরো বাড়বে। "
সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে পা যখন ক্লান্ত। রাস্তায় একটা অশ্বত্থ গাছের ছায়ায় বসলাম আমরা সবাই। পাখি ডাকছিলো৷ পাশে ছিল বিশাল হ্রদ। এই গাছের ছায়ায় বসে আমার সাথী হঠাৎ বলে উঠলো - অজাত ভুবন ভ্রূণ মাঝে যখন বিলীন হয়েছিনু ওই বিরাট জঠরে, ওই তব অবিশ্রাম কলতান অন্তরে মুদ্রিত হয়ে গেছে।
গাছের কি কোন ধর্ম আছে? গাছের প্রাণ আছে। তারপরেও তারা বেঁচে আছে সেই আদিম যুগ থেকে। সভ্যতার পর সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু এই আদিম সবুজ প্রাণ টিকে রয়েছে সভ্যতার বুকে চুপচাপ। কত অত্যাচার, কত ধ্বংস লীলা -তবু আজো মানুষের ক্ষমতা নেই তাকে ছাড়া বেঁচে থাকার। কারণ গাছ শুধু দিতে জানে। তাদের শরীর ক্ষয় হয়। কিন্তু সেই সবুজ আত্মা কোন এক বীজে অংকুরিত হয় কিশলয় রূপে।
"অজো নিত্যঃ শাশ্বতোহয়োং পুরাণো। ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে।। "
এই আত্মা নিত্য, শাশ্বত ও পুরাতন। শরীর ধ্বংস হলেও একে ধ্বংস করা যায়না।
গাছের ভগবান কে? আল্লাহ্, যীশু না একশো কোটি দেব দেবীর কোন একজন? গাছ মারা গেলে বেহেস্তে যায় নাকি স্বর্গে না হেভেনে যায়? নরকে গরম তেলের কড়াই তে আগুন জ্বালানোর জন্যও তো জ্বালানী হিসেবে গাছকে লাগবে।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর বেশি দূরে নেই।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর "প্রকৃতি" আসছে এ পৃথিবীর ক্ষমতায়৷
No comments:
Post a Comment