বাসে যাচ্ছিলাম। পাশের সিটে বসে এক ছেলে দুকানে হেডফোন গুঁজে মাথা নাড়ছিল। দেখলাম গান শুনছে। "তেরি প্যায়ার, প্যায়ার, প্যায়ার -হুক্কা বার"
আপনারা জানেন আমি একজন ভালো গায়ক। আর এটাও নিশ্চয়ই সবাই জানেন, সোনু নিগম ও সেই স্টেজ শেয়ার করতে চান যেখানে আমি একসময় গেয়েছি। তাই তিনি নীলরতনে আসছেন। তা আসুন। যদিও আমার গান সবাই শুনেছেন তবুও সেটা রণে বনে জলে জঙ্গলে সুযোগ পেলেই টেস্ট করা থেকে আমি বিরত থাকিনা।
তো পাশের ছেলেটিকে বললাম - ভাই, তুমি "দেওয়াল ভাঙো" শুনেছো?
সে বললো - দূর ঘাটের মড়া, ডিস্টার্ব করিসনা।
বুঝলাম সে সুর সাগরে নিমজ্জিত।
কি আর করা যাবে বাস থেকে নেমে ময়দানের পাশের ট্রাম রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ল্যাম্পপোস্টের গায়ে পোস্টার চোখে পড়লো - "বাংলা বাঁচাও। বাংলা ভাষা বাঁচাও। বাংলা সংস্কৃতি বাঁচাও৷ "
উত্সাহিত হয়ে দেখলাম সেই পোস্টারের তলায় ফোন নাম্বার দেওয়া। কোথাও যদি বাংলা ভাষাকে অপমান করা হয়, তাহলে ফোন করতে বলা আছে। তারা উচিত শিক্ষা দেবে। বুদ্ধি করে ফোনটা লাগালাম। দেখলাম কলার টিউন বাজছে - "বেখ্যায়ালি মে ভি তেরা.. "
ফোন ধরতে বললাম - "দাদা, তোমরা আমার বিখ্যাত গান দেওয়াল ভাঙো শুনেছো ?"
উত্তর এলো - রং নাম্বার৷
ময়দানে একটা গরু সুশীতল গাছের ছায়াতে সবুজ কচি ঘাস নিশ্চিন্তে খাচ্ছিল। ভাবলাম একেই শোনাই "দেওয়াল ভাঙো"। মোবাইলে গানটা শুরু হতে না হতেই হাম্বা হাম্বা করে তেড়ে এলো। একি অসভ্যতা! গানটা পুরোটা শোন। এইজন্য তুই গরু আর আমি মানুষ। গরু কি সাধে বলে? একে নিয়ে নাকি আবার যুদ্ধ চলে!
অগত্যা নীলরতনে ফিরে এলাম৷ ভাবলাম এক্যাডেমি বিল্ডিং এর দিকে গিয়ে একটু স্মৃতিচারণ করি৷ নিজের কলেজ অন্তত আমায় মনে রেখেছে। রাস্তায় অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিলাম৷ হঠাৎ একজন পাকড়াও করে বললো - দাদা, এই ফর্ম আর রক্তটা নিয়ে কোথায় জমা দিতে হবে?
ভাবলাম এত লোক থাকতে আমাকেই ধরলো! একে দিয়েই পরীক্ষা করা যাক্। জিজ্ঞেস করলাম - "সে তো জানিনে। কিন্তু তুমি কি আমার বিখ্যাত গান দেওয়াল ভাঙো শুনেছো? "
মুখ বেঁকিয়ে বললো - পাগল নাকি!!
কি করা যায়! অগত্যা বিকেল বেলায় লেডিজ হস্টেলের সামনে একটা পোস্টার লিখে দাঁড়িয়ে গেলাম। পোস্টারে লেখা "দেওয়াল ভাঙো"।
মেয়েরা আসে দেখে, হাসে নিজেদের মধ্যে, চলেও যায়৷ আমার মনে আশা জাগে কেউ যদি এই শব্দটা নেহাৎ কৌতূহল বশত ইউটিউব বা গু-গুলে সার্চ করে গানটা শোনে। নাহ্ দুঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও একটাও ভিউ বাড়লোনা। জেসিবি র খুদাই দেখবে, বাচ্চার লেবু খাওয়া দেখবে, দুই বেড়ালের মারামারি দেখবে তবু আমার গান শুনবেনা। হতাশার জমজমাট অন্ধকার আমার চারপাশে নামছিল৷ হঠাৎ দেখি কয়েকটা ছেলে বাওয়ালি করতে করতে ফিরছে। আমার পোস্টারে "দেওয়াল ভাঙো" লেখা দেখে ওরা কি বুঝলো জানিনা, ছেলেগুলো মিলে লেডি হস্টেলের দেওয়াল ভাঙতে শুরু করলো৷ উল্টা সমঝিলি রাম। আমি দেখলাম - হাওয়া খারাপ। কেটে পড়ি।
বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়লাম৷ কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। স্বপ্ন এ দেখি "কফি উইথ কারণ " এ আমাকে ডাকা হয়েছে।
আমি বললাম কারণ জেহর কে - "Sir কা যম্, শেষে আমায় নিয়ে কেন? "
কারণ বললেন - "আসলে আপনি একটা অনন্য রেকর্ড করেছেন, আপনার গান 'Renovatio' একটা লোকও শোনেনি। এটা একটা গিনেস বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। ইউটিউবে এমন কোন ভিডিও নেই যেটার শূন্য ভিউ। তাই সারকাজম্ হচ্ছে আপনাকে নিয়ে। আপনি বলুন এই অনন্য রেকর্ডএর অধিকারী হয়ে কেমন লাগছে? "
আপনারা জানেন আমি একজন ভালো গায়ক। আর এটাও নিশ্চয়ই সবাই জানেন, সোনু নিগম ও সেই স্টেজ শেয়ার করতে চান যেখানে আমি একসময় গেয়েছি। তাই তিনি নীলরতনে আসছেন। তা আসুন। যদিও আমার গান সবাই শুনেছেন তবুও সেটা রণে বনে জলে জঙ্গলে সুযোগ পেলেই টেস্ট করা থেকে আমি বিরত থাকিনা।
তো পাশের ছেলেটিকে বললাম - ভাই, তুমি "দেওয়াল ভাঙো" শুনেছো?
সে বললো - দূর ঘাটের মড়া, ডিস্টার্ব করিসনা।
বুঝলাম সে সুর সাগরে নিমজ্জিত।
কি আর করা যাবে বাস থেকে নেমে ময়দানের পাশের ট্রাম রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ল্যাম্পপোস্টের গায়ে পোস্টার চোখে পড়লো - "বাংলা বাঁচাও। বাংলা ভাষা বাঁচাও। বাংলা সংস্কৃতি বাঁচাও৷ "
উত্সাহিত হয়ে দেখলাম সেই পোস্টারের তলায় ফোন নাম্বার দেওয়া। কোথাও যদি বাংলা ভাষাকে অপমান করা হয়, তাহলে ফোন করতে বলা আছে। তারা উচিত শিক্ষা দেবে। বুদ্ধি করে ফোনটা লাগালাম। দেখলাম কলার টিউন বাজছে - "বেখ্যায়ালি মে ভি তেরা.. "
ফোন ধরতে বললাম - "দাদা, তোমরা আমার বিখ্যাত গান দেওয়াল ভাঙো শুনেছো ?"
উত্তর এলো - রং নাম্বার৷
ময়দানে একটা গরু সুশীতল গাছের ছায়াতে সবুজ কচি ঘাস নিশ্চিন্তে খাচ্ছিল। ভাবলাম একেই শোনাই "দেওয়াল ভাঙো"। মোবাইলে গানটা শুরু হতে না হতেই হাম্বা হাম্বা করে তেড়ে এলো। একি অসভ্যতা! গানটা পুরোটা শোন। এইজন্য তুই গরু আর আমি মানুষ। গরু কি সাধে বলে? একে নিয়ে নাকি আবার যুদ্ধ চলে!
অগত্যা নীলরতনে ফিরে এলাম৷ ভাবলাম এক্যাডেমি বিল্ডিং এর দিকে গিয়ে একটু স্মৃতিচারণ করি৷ নিজের কলেজ অন্তত আমায় মনে রেখেছে। রাস্তায় অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিলাম৷ হঠাৎ একজন পাকড়াও করে বললো - দাদা, এই ফর্ম আর রক্তটা নিয়ে কোথায় জমা দিতে হবে?
ভাবলাম এত লোক থাকতে আমাকেই ধরলো! একে দিয়েই পরীক্ষা করা যাক্। জিজ্ঞেস করলাম - "সে তো জানিনে। কিন্তু তুমি কি আমার বিখ্যাত গান দেওয়াল ভাঙো শুনেছো? "
মুখ বেঁকিয়ে বললো - পাগল নাকি!!
কি করা যায়! অগত্যা বিকেল বেলায় লেডিজ হস্টেলের সামনে একটা পোস্টার লিখে দাঁড়িয়ে গেলাম। পোস্টারে লেখা "দেওয়াল ভাঙো"।
মেয়েরা আসে দেখে, হাসে নিজেদের মধ্যে, চলেও যায়৷ আমার মনে আশা জাগে কেউ যদি এই শব্দটা নেহাৎ কৌতূহল বশত ইউটিউব বা গু-গুলে সার্চ করে গানটা শোনে। নাহ্ দুঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরও একটাও ভিউ বাড়লোনা। জেসিবি র খুদাই দেখবে, বাচ্চার লেবু খাওয়া দেখবে, দুই বেড়ালের মারামারি দেখবে তবু আমার গান শুনবেনা। হতাশার জমজমাট অন্ধকার আমার চারপাশে নামছিল৷ হঠাৎ দেখি কয়েকটা ছেলে বাওয়ালি করতে করতে ফিরছে। আমার পোস্টারে "দেওয়াল ভাঙো" লেখা দেখে ওরা কি বুঝলো জানিনা, ছেলেগুলো মিলে লেডি হস্টেলের দেওয়াল ভাঙতে শুরু করলো৷ উল্টা সমঝিলি রাম। আমি দেখলাম - হাওয়া খারাপ। কেটে পড়ি।
বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়লাম৷ কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। স্বপ্ন এ দেখি "কফি উইথ কারণ " এ আমাকে ডাকা হয়েছে।
আমি বললাম কারণ জেহর কে - "Sir কা যম্, শেষে আমায় নিয়ে কেন? "
কারণ বললেন - "আসলে আপনি একটা অনন্য রেকর্ড করেছেন, আপনার গান 'Renovatio' একটা লোকও শোনেনি। এটা একটা গিনেস বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ড। ইউটিউবে এমন কোন ভিডিও নেই যেটার শূন্য ভিউ। তাই সারকাজম্ হচ্ছে আপনাকে নিয়ে। আপনি বলুন এই অনন্য রেকর্ডএর অধিকারী হয়ে কেমন লাগছে? "
আমি বললাম - বলবো তবে তার আগে একটু কফি হয়ে যাক্।
কারণ জেহর - এই শো তে তাদেরকেই কফি দেওয়া হয় যাদের অন্তত একজন টিভি তে দেখবে৷ আপনাকে কেউ দেখবেনা৷ আপনি বলুন।
আমি - আসলে কেমন একটা লজ্জা লজ্জা লাখছে। আবার নিজেকে নিয়ে গর্বিত হচ্ছি। এই মিলিয়ন, বিলিয়ন ভিউ র যুগে আমার গান একজনও শোনেনি৷ এই রেকর্ড করা টা খুব চাপের৷ আর আমি কাল একটা গরুর কাছে যা রেসপন্স পেয়েছি তাতে আমি সিউর, এই ইন্টারভিউ যদি কেউ ভুল করে দেখেন সেও এই রেকর্ড ভাঙার জন্য ও অন্তত শুনবেনা আমার গান। সুতরাং আদি অনন্ত কাল ধরে এই রেকর্ড আমি ধরে রাখতে পারবো বলেই আমার বিশ্বাস। ছোটবেলা থেকে আমার খুব স্বপ্ন ছিল ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করার। কিন্তু ফ্লপ আর্ট এ যে আমি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করবো তা আমি কখনো ভাবিনি৷ এই রেকর্ড আমি নিজের যোগ্যতায় করেছি৷ কোন প্রোডাকশন হাউস, মিডিয়ার হেল্প লাগেনি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আমার এই জিরো ভিউ পেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও কেউ এটা দেখবেন না, তবুও তাদেরকে ধন্যবাদ।
তারপর আমার ঘুম ভেঙে গেলো৷ আমি আমার এই অনন্য অভিজ্ঞতার কথা লিখে ফেললাম আর পোস্টালাম্ ।।
বিঃদ্রঃ - বুদ্ধ আসছে৷ আবার সংখ্যার ডানদিকে জিরো ভিউ পেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন্।।
No comments:
Post a Comment