Wednesday, November 20, 2019

কৃতীcism

আমার সৌভাগ্যটাও এমন এই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক এর রেজাল্টের সপ্তাহে পড়লাম অসুখে। মোবাইল স্ক্রিনে তাকালেই চোখ ব্যথা করছিল। তাই বেশ কিছুদিন মোবাইল থেকে দূরে দূরে ছিলাম, যতটা কম ব্যবহার করা যায়। এই আমি সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে জল খেয়ে পায়খানা করতে যেতাম, তারপর ছুটতাম টিউশনে, আমার আদর্শ এই লোকটি , আমি এই নিয়ে পড়তে চাই, এই হতে চাই। প্রতি বছর এই শুনে শুনে কানে জং পড়ে গেল। এইসব নিউজ ফিড এখন অতীত আমার টাইমলাইনে। পরের বছর আবার চলে আসবে নতুন কৃতী। প্রতি বছর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, জয়েন্ট, আই.আই.টি মিলিয়ে যদি ৫০০ জন খুব ভালো রেজাল্ট করা ছাত্র-ছাত্রীকে ধরি গত দশ বছরে হয় ৫০০০ জন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী। এরা যায় কোথায় ? ৫০০০ জন মেধাবী যদি ঠিক করে এই দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব পালটে দেবে অনায়াসে সেটা সম্ভব। কিন্তু কি হয়। প্রতি বছর নতুন কৃতী আসে, কেউ বাহবা দেয়, ইন্টারভিউ নেয়। প্রাক্তন কৃতীরা বলে আমাদের সময় কম নাম্বার উঠতো। অতি উত্সাহী কেউ নিজের জ্ঞান যে বেশি নতুনের থেকে তাকে বুঝিয়ে দিয়ে আসে। ডাক্তার হয় কেউ, কেউ যদিও বা গ্রামে যায়, পালিয়ে আসে পরে শহরে। বড় নার্সিংহোমে কনসাল্ট্যান্ট হয়। গ্রাম পড়ে থাকে অন্ধকারে। হাতুড়ে, ওঝা দের ভরসায়। মানুষ এতেই খুশি। ইঞ্জিনিয়ার রা চেষ্টা করে বিদেশে গিয়ে ডলার, ইউরো তে ইনকাম করতে। রিসার্চ স্কলার রা যায় বাইরে তাড়াতাড়ি পেপার পাবলিশ করতে। এতে টাকা ইনকাম ভালো হবে। এই দেশের জনসংখ্যা এদিকে হু হু করতে বাড়তে থাকে। রিসোর্স বাইরে পাচার হয়। যেটুকু পড়ে থাকে সেটা নিয়ে শুরু হয় মারামারি। রিইউনিয়নে প্রতি মাসে কার কত ইনকাম হচ্ছে সেই নিয়ে তুল্যমূল্য বিচার করে নেয় কৃতী জনতা। যখন টেবিলের একটা কোণায় বসে কয়েকজন মেধাবী কৃতী ছাত্র ছাত্রী বসে দাঁড়িপাল্লায় তাদের বেতন ওজন করে, সেই দেশেই ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর প্রায় ৫০% মৃত্যু হয় অপুষ্টি সম্পর্কিত কারণে। প্রতি ৩০ মিনিটে একজনের রেপ হয় আমাদের দেশে। প্রতি বছর প্রতি রাজ্যে কম বেশি ১০০ চিকিৎসক নিগৃহীত হয়। একজন কৃতীও যদি বলত - এরকম দেশের কৃতী হয়ে আমি কি খেয়েছি, কি পড়েছি নিয়ে ইন্টারভিউ দিতে লজ্জা বোধ করছি !!

No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...