Wednesday, November 20, 2019

যেটা ছিলনা ছিলনা সেটা না পাওয়াই থাক

সচ্ছল পেশা, ফেসবুক- হোয়াটস্যাপে র অনেক ভারচুয়াল বন্ধু, স্টেবল রিলেশন এর পরেও একা লাগছে৷ মাঝে মাঝে মাথায় রাগ উঠে যাচ্ছে। দুম দাম রাগ আসছে। তাহলে বলি, ২০১৫-১৬ সালে করা একটা সমীক্ষা অনুযায়ী, আপনি ভারতের ইয়ং জেন এর ১০% জনসংখ্যার অংশ৷ ২০১৭-১৮ র সমীক্ষা তে ১২%। দিন দিন এটা বাড়ছে। শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বজুড়ে৷ সম্প্রতি বাজারে যেগুলো এখন খুব জনপ্রিয় গান সেগুলোর লিরিক্স খুঁজুন -
"সে যে বসে আছে একা একা", "একলা ঘর",
" আমার একলা আকাশ", " লোনলি ", "এম্পটিনেস ", "আমাকে আমার মত", "আজ শেষমেশ নেই তোর কেউ নেই " ইত্যাদি ইত্যাদি৷
প্রমাণ করে কেন গানগুলো জনপ্রিয়। প্রমাণ করে এই মহামারীর অস্তিত্ব কে। এর কারণ খুঁজতে গেলে যেটা প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসবে সেটা হল সাকসেস রেস৷
"সাকসেস-fool" কথাটার মধ্যে একটা অদ্ভুত ব্যংগ রয়েছে৷ যে মানুষটা ভাবে সাকসেস পেয়েছে সে আসলে বোকা৷ কারণ সাকসেস কখনো কমপ্লিট হতে পারেনা৷ সব সাকসেস পেতে কোন না কোন ব্যর্থতা কে মেনে নিতে হয় কোল্যাটারাল ড্যামেজ হিসেবে মাথা পেতে৷ স্যাক্রিফাইস করতে হয় অনেক কিছু কে৷ যে প্রফেশনাল লাইফে বীভৎস সাকসেসফুল, গুগলে সার্চ করলে যার নামে উইকিপিডিয়া র লিংক আসে সেই মানুষটিও হয় পারিবারিক জীবনে, না হয় বন্ধু বান্ধবের জীবনে কোথাও না কোথাও ব্যর্থ৷ তার আগের বা বর্তমান কোন সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে৷ তার পুরানো কোন বন্ধুর সাথে কথা হয়না যেকোন কারণেই হোক৷
আইনস্টাইনের কথায় - 'সুখী জীবন কাটাতে গেলে কোন লক্ষ্য এর সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখো৷ বস্তু বা মানুষের সাথে নয়৷ '
যেখানে যাকে দরকার, যে যেখানে প্রাসংগিক তার সাথে সেখানে গভীরতা৷
যে তার লাইফে যত ডায়নামিক সে তত সাকসেসফুল৷ অ্যাটাচমেন্ট লিডস্ টু ফেলিউর।
নিজের জীবনেও আমি যে ফেজে ডায়নামিক থেকেছি তখন বেশি সাফল্য পেয়েছি৷ এটা সত্যি৷ কিন্তু তার বদলে হারাতে হয়েছে অনেক কিছু।
যার ফেসবুক পেজে লক্ষ বা হাজার অনুগামী, সেই মানুষটি দিনের শেষে একটা সিগারেট ধরিয়ে ফেসবুকের সার্চ অপশনে গিয়ে পুরানো বন্ধু র নাম সার্চ দেয়। বাইরে বৃষ্টি পড়তে থাকে আর মানুষটা স্মৃতি হাতড়াতে থাকে। যদি একদিন বাঁধা পড়ে কাজে, তবু মনে রেখো। সাকসেসফুল কে তাহলে ? এই মানুষটা নাকি যে তার ৫০ বছরেও অনেক পুরানো বন্ধুর সাথে গোয়া ট্রিপে যেতে পারে সেই মানুষটা ?? সাকসেস এর ডেফিনিশন আলাদা তাই সবার কাছে৷ যে কোন সম্পর্ক প্রায়োরিটি হারায় এটা ছাড়াও অন্য একটা প্রশ্নে৷ সেটা হল মতের অমিল। দুটো মানুষের জীবনদর্শন কখনো এক হতে পারেনা৷ অনেক বছরের বন্ধুর সাথে হঠাত্ ই মতের অমিল হয়ে প্রায়োরিটি হারানোর শুরু হয়। আগে আমি ব্যাপারটা মেনে নিতে পারতাম না৷ এখন সমস্যাটা হয়না৷ বরং যে আমার মতের বিরোধী তার সাথে কথা বলে, তার যুক্তি শুনলে নিজের মতকে আরো কনফিডেন্ট করে তোলা যায়, মত ভুল হলে পালটে ফেলা যায়৷ কিন্তু দূরত্ব বাড়ানো ঠিক নয়৷ সব শাসক যদি বিরোধীদের এই দৃষ্টিতে দেখতো !!

No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...