১
মানুষ মারা যায় তখন নাকি সব শেষ ;
কিন্তু তার আগেও কেউ কেউ শেষ হয়।
যখন কোনকিছুই আর দাগ কাটেনা।
বন্দুকের গুলি দাগ কাটেনা,
প্রাক্তনের আকুতি দাগ কাটেনা,
যুক্তিতর্ক বাদ-বিবাদ বিস্বাদ লাগে,
নারীর ছলনা দাগ কাটেনা -
রাজনীতি, ঘটি-বাঙালের বাইনারি,
অথবা ইসিজিতে ওঠা শেষ কম্প্লেক্স,
কিছুই আর দাগ কাটেনা।
অথচ সে হাসে, মেশে নির্বিকার প্রেমিকের মত-
বিকেলের পুকুরে হাঁসের মত সদা ব্যস্ত,
নাহলে নদীর পাড়ে যে ন্যাড়া গাছ টা -
এখনো জীবাশ্ম হতে বাকি আছে তার মত,
রাত নামার অপেক্ষা করে।
জীবন এগিয়ে চলে,
গুহায় ধ্যানমগ্ন যোগীকে প্রলুব্ধ করতে চায়-
ভাবনারা স্বর্গের অপ্সরা হয়ে -
সে দেখে, শোনে, হাসে আবার ডুবে যায়,
তবু কিছু দাগ কাটেনা ।।
২
কিছু মানুষ ভাবে তাকে কে কি ভাবলো যায় আসে না। আসলে তাদের একসময় অনেক যায় আসতো৷ তারপর বুঝতে পেরেছে তাদের সাইকোলজি বোঝানো সম্ভব নয়। অনেকে দূরে সরে গেছে। বোঝাতে গেলে আরো ভুল বুঝবে লোকে। তাই এখন আর যায় আসেনা।
৩
বোবা মেঘে বৃষ্টি আসে,
যে পথের দুদিকে কালো অন্ধকার সাজানো থাকে -
সেই পথের শেষ দিকে মৃত্যুর আলো দেখা যায়।
মৃত্যু যখন আশার আলো দেখায় -
জীবন হয়ে দাঁড়ায় অন্ধকূপ।।
৪
যাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা পাড়ার মোড়ে -
সে মেসেজ দিলে যা হয়।
আনন্দে মন ফুলকো লুচির মতো -
ঘরহারা পাখি আমাদের মত কত শত,
ঘরে ফেরে।
ছুঁতে চাই না, ধরতেও চাইনা।
অন্ধকার হলের কোণ বা ঝোঁপঝাড় -
কিছুই চাইনা।
একটু তোমাকে দেখতে চাই -
এই ক্ষুদ্র দাবী নিয়ে হয় শুরু।
দোতলার জানালায় তোমার বসে থাকা খোলা চুলে -
আমিও মাঝে মাঝেই চলে যাই ওই রাস্তায় -
পথ ভুলে।
হেসেছিলে আমায় দেখে,
আমার গালে পড়েছিল টোল।
এভাবেই কয়েক বছর চলে।
পথ ভুলে।
তারপর সফল কোন কাঁধ ঝড় নিয়ে আসে,
ময়ূরপঙ্খী করে তোমাকে বসিয়ে নিয়ে যায় -
অলীক সুখের আস্তানায়।
আমি হয়ে যাই ঘরহারা পাখি,
উড়ে বেড়াই এদিক সেদিক বন বাদাড়ে -
যদি কোনদিন পাই দেখতে সে হাসি।
আমাকে লাগবেনা জানি -
সুখী ঘরে কবিদের ঢোকা মানা।
অপেক্ষা করে যাই, তবু একটা মেসেজ আসেনা।
সুখী ঘরে কবিদের ঢোকা মানা।
সফল কাঁধে চেপে পায়ে মাটি লাগেনা,
আর আমি মাটি, গাছ, পাখি হয়ে আছি।
খুব বেশী কিছু চাইনি,
চেয়েছি শুধু একটু হাসি।
কিন্তু সে হাসি প্লেটনিক প্লেটে মাংসপিণ্ড হয়ে -
খেয়ে যায় যান্ত্রিক মৌমাছি।।
৫
হলুদ গোলাপ
আবছা আলোতে বসেছিলাম নদীর পাড়ে,
একা, একদম একা -
চাঁদ ও একা,
কিন্তু তাকে হাজার নক্ষত্র প্রেম নিবেদন করে।
আমার চাঁদের মত কোন লবি নেই।
আমি নিতান্ত তুচ্ছ শামুকের মত
একা, একদম একা-
মাটিতে বসে স্রোত গুনছি।
আকাশে তাকিয়ে কুয়াশার ওড়নার আড়াল থেকে-
জোনাকি র মত উঁকি দিয়ে আলপনা কাটছি।
যে আকাশে পাখি ওড়েনা সেটা কিসের আকাশ ;
যে প্রেম ফকির লালন জানেনা সে কিসের প্রেম -
নেটিজেন এর ফোন বেজে ওঠে,
বিচ্ছিন্ন পৃথিবী জুড়তে চায় সুড়ঙ্গ পথে -
উন্মত্ত নীহারিকার সাথে।
জেলে বন্দী আসামীর মত ছটপট করে কুশীলব-
জীবনের নাটকে তারা ক্লান্ত।
মনের আয়না আজ ভাঙচুর -
প্রত্যেকটা কাঁচখন্ড আঙুল তুলে প্রশ্ন করছে -
প্লেটনিক হাঁটাচলা কবিতা ছাড়া কোথায়?
নদীর স্রোত উত্তর দেয় -
আর যাই হোক সে ট্র্যাজেডি আনেনা ||
৬
চারিদিকে ধরাধরি খেলা চলছে -
এ তাকে ধরছে, সে একে ধরছে।
কারোর সময় নেই।
কারোর সময় নেই -
কবি হওয়ার।
পাড়ার মাসিমা তার মেয়ের জন্য ছেলে ধরতে ব্যস্ত,
পাড়ার কাকিমা তার ছেলের জন্য -
ভালো বাড়ি, যেখানে অর্থলাভ আছে,
সেই বাড়ির উচ্চ শিক্ষিত ঘরোয়া মেয়ে খোঁজে।
ছোটবেলার লুকোচুরি ভুলে গিয়ে -
ছেলে মেয়েরা ধরাধরি তে চোখ বোজে।
চোখ খুলে সকাল হলে বাথরুম সেরে,
রুটিন ঘনিষ্ঠতা -
তারপর ডিম পাঁউরুটি ফ্রুটজুস গিলে,
ছেলে বেরোলো টাকা কালেকশনে।
ফিরে এসে রুটিন হাসি,
কখনো রুটিন রেস্তোরাঁয় বিরিয়ানি -
বা দুদিনের বোহেমিয়ান জীবনের ছবি আপলোড।
বছর পেরোতে না পেরোতো শালী হল মাসি।
নতুন অতিথিকে বলে- কথা বলো।
সে কি অদ্ভুত আব্দার, চাপাচাপি।
চাপ খেয়ে একদিন বলে ওঠে বাপি -
ব্যাস, সে ভুলের শাস্তি তাকে বয়ে বেড়াতে হয়,
সারাটা জীবনময়।
ইঁদুর দৌড়ে নাম লেখানো -
তারপর আবার শুরু হবে ধরাধরি।
জীবনে কি করলেন?
এ জীবনে প্রেম কোথায়, কবিতা কোথায়-
দুটো রঙীন রেমন্ডস্ আর বেনারসী দিয়ে-
তুমি আকাশ রাঙাতে চাও!???
৭
আজব এ যুগ,
ঘৃণার ভিডিও ভাইরাল,
আর প্রেমের কবিতা ব্যর্থ প্রেমিকের মত-
অন্ধকার ঘরে ছটপট করে মরে।।
৮
অনেক বোঝাতে চেয়েছি নানাভাবে -
বোঝোনি।
সরাসরি বলতে পারিনি কখনো।
তুমি চলে গেছো অন্যের হাত ধরে সুখ খুঁজে নিতে।
আর কতভাবে তোমাকে বোঝাতে পারি,
একবারো ভেবে দেখলেনা যে আমি নারী।
আমি অব্যক্ত শিলালিপি,
তুমি সম্রাট - এসে ভাষা দাও।
তুমি সেই প্রথম পুরুষ, প্রথম ভোর।
তোমার কাছেই রোজ এসে একটিবার থামি-
তুমি আমার, তোমার মধ্যে-
একমাত্র আমি।
অথচ ওরা বলেছিল তুমি বৃষ্টির মত,
অন্য কেউ সে বৃষ্টিতে ভিজলে মন খারাপ করতে নেই।
আজ তবে কেন এ অঝোর বৃষ্টিপাত।
আমি অন্যপুরুষ বেছে নেবো ভেবেও,
কেন তোমার দিকে চেয়ে থাকি,
মুক্তির আশায়।।
৯
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যেখানে কোন ঝগড়া নেই,
যে জীবন এর শুরু কান্না দিয়ে,
সে যেন কাঁদতে পারে, হাসতে পারে।
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যেখানে যারা কাছে, তাদের সাথে দূরত্ব থাকেনা,
যারা দূরে তারা কাছে এসে যায়।
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যে সংসারে সবাই আমরা রাধা -
পরকীয়াতে সবাই আমরা বাঁধা,
সেখানে কোন ধর্ম নেই,
ঘৃণা নেই -
নেই কোন ফেসবুকে ভাইরাল ধর্মীয় নির্যাতন,
আছে শুধু মানুষ আর প্রেম।
আমার পৃথিবী কেন এমন ?
লাখ টাকা খরচ করে মাংস বিলি,
লাখ টাকা গয়না -শাঁখা-পলা পরে,
বধূ ঢোকে ঘরে নির্যাতিতা হতে,
কোথাও বা হয় স্বামী নির্যাতন।
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যেখানে ভালোবাসলে বিয়ে করার তাগাদা নেই,
বিয়ে করলে নিয়ম-নীতির তাগাদা নেই,
সব মেনে নির্যাতনের বালাই নেই -
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
মানুষ মারা যায় তখন নাকি সব শেষ ;
কিন্তু তার আগেও কেউ কেউ শেষ হয়।
যখন কোনকিছুই আর দাগ কাটেনা।
বন্দুকের গুলি দাগ কাটেনা,
প্রাক্তনের আকুতি দাগ কাটেনা,
যুক্তিতর্ক বাদ-বিবাদ বিস্বাদ লাগে,
নারীর ছলনা দাগ কাটেনা -
রাজনীতি, ঘটি-বাঙালের বাইনারি,
অথবা ইসিজিতে ওঠা শেষ কম্প্লেক্স,
কিছুই আর দাগ কাটেনা।
অথচ সে হাসে, মেশে নির্বিকার প্রেমিকের মত-
বিকেলের পুকুরে হাঁসের মত সদা ব্যস্ত,
নাহলে নদীর পাড়ে যে ন্যাড়া গাছ টা -
এখনো জীবাশ্ম হতে বাকি আছে তার মত,
রাত নামার অপেক্ষা করে।
জীবন এগিয়ে চলে,
গুহায় ধ্যানমগ্ন যোগীকে প্রলুব্ধ করতে চায়-
ভাবনারা স্বর্গের অপ্সরা হয়ে -
সে দেখে, শোনে, হাসে আবার ডুবে যায়,
তবু কিছু দাগ কাটেনা ।।
২
কিছু মানুষ ভাবে তাকে কে কি ভাবলো যায় আসে না। আসলে তাদের একসময় অনেক যায় আসতো৷ তারপর বুঝতে পেরেছে তাদের সাইকোলজি বোঝানো সম্ভব নয়। অনেকে দূরে সরে গেছে। বোঝাতে গেলে আরো ভুল বুঝবে লোকে। তাই এখন আর যায় আসেনা।
৩
বোবা মেঘে বৃষ্টি আসে,
যে পথের দুদিকে কালো অন্ধকার সাজানো থাকে -
সেই পথের শেষ দিকে মৃত্যুর আলো দেখা যায়।
মৃত্যু যখন আশার আলো দেখায় -
জীবন হয়ে দাঁড়ায় অন্ধকূপ।।
৪
যাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা পাড়ার মোড়ে -
সে মেসেজ দিলে যা হয়।
আনন্দে মন ফুলকো লুচির মতো -
ঘরহারা পাখি আমাদের মত কত শত,
ঘরে ফেরে।
ছুঁতে চাই না, ধরতেও চাইনা।
অন্ধকার হলের কোণ বা ঝোঁপঝাড় -
কিছুই চাইনা।
একটু তোমাকে দেখতে চাই -
এই ক্ষুদ্র দাবী নিয়ে হয় শুরু।
দোতলার জানালায় তোমার বসে থাকা খোলা চুলে -
আমিও মাঝে মাঝেই চলে যাই ওই রাস্তায় -
পথ ভুলে।
হেসেছিলে আমায় দেখে,
আমার গালে পড়েছিল টোল।
এভাবেই কয়েক বছর চলে।
পথ ভুলে।
তারপর সফল কোন কাঁধ ঝড় নিয়ে আসে,
ময়ূরপঙ্খী করে তোমাকে বসিয়ে নিয়ে যায় -
অলীক সুখের আস্তানায়।
আমি হয়ে যাই ঘরহারা পাখি,
উড়ে বেড়াই এদিক সেদিক বন বাদাড়ে -
যদি কোনদিন পাই দেখতে সে হাসি।
আমাকে লাগবেনা জানি -
সুখী ঘরে কবিদের ঢোকা মানা।
অপেক্ষা করে যাই, তবু একটা মেসেজ আসেনা।
সুখী ঘরে কবিদের ঢোকা মানা।
সফল কাঁধে চেপে পায়ে মাটি লাগেনা,
আর আমি মাটি, গাছ, পাখি হয়ে আছি।
খুব বেশী কিছু চাইনি,
চেয়েছি শুধু একটু হাসি।
কিন্তু সে হাসি প্লেটনিক প্লেটে মাংসপিণ্ড হয়ে -
খেয়ে যায় যান্ত্রিক মৌমাছি।।
৫
হলুদ গোলাপ
আবছা আলোতে বসেছিলাম নদীর পাড়ে,
একা, একদম একা -
চাঁদ ও একা,
কিন্তু তাকে হাজার নক্ষত্র প্রেম নিবেদন করে।
আমার চাঁদের মত কোন লবি নেই।
আমি নিতান্ত তুচ্ছ শামুকের মত
একা, একদম একা-
মাটিতে বসে স্রোত গুনছি।
আকাশে তাকিয়ে কুয়াশার ওড়নার আড়াল থেকে-
জোনাকি র মত উঁকি দিয়ে আলপনা কাটছি।
যে আকাশে পাখি ওড়েনা সেটা কিসের আকাশ ;
যে প্রেম ফকির লালন জানেনা সে কিসের প্রেম -
নেটিজেন এর ফোন বেজে ওঠে,
বিচ্ছিন্ন পৃথিবী জুড়তে চায় সুড়ঙ্গ পথে -
উন্মত্ত নীহারিকার সাথে।
জেলে বন্দী আসামীর মত ছটপট করে কুশীলব-
জীবনের নাটকে তারা ক্লান্ত।
মনের আয়না আজ ভাঙচুর -
প্রত্যেকটা কাঁচখন্ড আঙুল তুলে প্রশ্ন করছে -
প্লেটনিক হাঁটাচলা কবিতা ছাড়া কোথায়?
নদীর স্রোত উত্তর দেয় -
আর যাই হোক সে ট্র্যাজেডি আনেনা ||
৬
চারিদিকে ধরাধরি খেলা চলছে -
এ তাকে ধরছে, সে একে ধরছে।
কারোর সময় নেই।
কারোর সময় নেই -
কবি হওয়ার।
পাড়ার মাসিমা তার মেয়ের জন্য ছেলে ধরতে ব্যস্ত,
পাড়ার কাকিমা তার ছেলের জন্য -
ভালো বাড়ি, যেখানে অর্থলাভ আছে,
সেই বাড়ির উচ্চ শিক্ষিত ঘরোয়া মেয়ে খোঁজে।
ছোটবেলার লুকোচুরি ভুলে গিয়ে -
ছেলে মেয়েরা ধরাধরি তে চোখ বোজে।
চোখ খুলে সকাল হলে বাথরুম সেরে,
রুটিন ঘনিষ্ঠতা -
তারপর ডিম পাঁউরুটি ফ্রুটজুস গিলে,
ছেলে বেরোলো টাকা কালেকশনে।
ফিরে এসে রুটিন হাসি,
কখনো রুটিন রেস্তোরাঁয় বিরিয়ানি -
বা দুদিনের বোহেমিয়ান জীবনের ছবি আপলোড।
বছর পেরোতে না পেরোতো শালী হল মাসি।
নতুন অতিথিকে বলে- কথা বলো।
সে কি অদ্ভুত আব্দার, চাপাচাপি।
চাপ খেয়ে একদিন বলে ওঠে বাপি -
ব্যাস, সে ভুলের শাস্তি তাকে বয়ে বেড়াতে হয়,
সারাটা জীবনময়।
ইঁদুর দৌড়ে নাম লেখানো -
তারপর আবার শুরু হবে ধরাধরি।
জীবনে কি করলেন?
এ জীবনে প্রেম কোথায়, কবিতা কোথায়-
দুটো রঙীন রেমন্ডস্ আর বেনারসী দিয়ে-
তুমি আকাশ রাঙাতে চাও!???
৭
আজব এ যুগ,
ঘৃণার ভিডিও ভাইরাল,
আর প্রেমের কবিতা ব্যর্থ প্রেমিকের মত-
অন্ধকার ঘরে ছটপট করে মরে।।
৮
অনেক বোঝাতে চেয়েছি নানাভাবে -
বোঝোনি।
সরাসরি বলতে পারিনি কখনো।
তুমি চলে গেছো অন্যের হাত ধরে সুখ খুঁজে নিতে।
আর কতভাবে তোমাকে বোঝাতে পারি,
একবারো ভেবে দেখলেনা যে আমি নারী।
আমি অব্যক্ত শিলালিপি,
তুমি সম্রাট - এসে ভাষা দাও।
তুমি সেই প্রথম পুরুষ, প্রথম ভোর।
তোমার কাছেই রোজ এসে একটিবার থামি-
তুমি আমার, তোমার মধ্যে-
একমাত্র আমি।
অথচ ওরা বলেছিল তুমি বৃষ্টির মত,
অন্য কেউ সে বৃষ্টিতে ভিজলে মন খারাপ করতে নেই।
আজ তবে কেন এ অঝোর বৃষ্টিপাত।
আমি অন্যপুরুষ বেছে নেবো ভেবেও,
কেন তোমার দিকে চেয়ে থাকি,
মুক্তির আশায়।।
৯
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যেখানে কোন ঝগড়া নেই,
যে জীবন এর শুরু কান্না দিয়ে,
সে যেন কাঁদতে পারে, হাসতে পারে।
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যেখানে যারা কাছে, তাদের সাথে দূরত্ব থাকেনা,
যারা দূরে তারা কাছে এসে যায়।
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যে সংসারে সবাই আমরা রাধা -
পরকীয়াতে সবাই আমরা বাঁধা,
সেখানে কোন ধর্ম নেই,
ঘৃণা নেই -
নেই কোন ফেসবুকে ভাইরাল ধর্মীয় নির্যাতন,
আছে শুধু মানুষ আর প্রেম।
আমার পৃথিবী কেন এমন ?
লাখ টাকা খরচ করে মাংস বিলি,
লাখ টাকা গয়না -শাঁখা-পলা পরে,
বধূ ঢোকে ঘরে নির্যাতিতা হতে,
কোথাও বা হয় স্বামী নির্যাতন।
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
যেখানে ভালোবাসলে বিয়ে করার তাগাদা নেই,
বিয়ে করলে নিয়ম-নীতির তাগাদা নেই,
সব মেনে নির্যাতনের বালাই নেই -
আমার পৃথিবী কেন এমন হয়না?
১০
কেউ কবিতা লিখে যখন পড়তে বলে-
আমার গায়ে জ্বালা ধরে।
মনে হয় থাবড়ে দিই।
সেটা আমি।
কোন একবেলা আবার নেশার মত -
ভালো কবিতার জন্য হাহাকার করি,
সেটাও আমি।
কেউ আঁকতে বললে,
মুখ থেকে চার অক্ষরের নীচে শব্দ বেরোয় না।
অথচ আমিই কখনো আট প্রহর না খেয়ে-
মাস্টারপিস আঁকতে চেয়েছি মত্ত বেলায়।
বলিউডি গান মাইকে বাজলে,
কান চাপা দিই।
আর আমিই কখনো নিশুতি রাতে,
জ্যাকেট গায়ে শব্দ শিকারে বেরোই।
মেয়েরা হেসে তাকালে,
মাথা নীচু করে অন্য দিকে পালাই,
এই আমিই নাকি প্রেমিক কখনো-
চোখে চোখ রেখে বলিষ্ঠ নমনীয়তায়।
রাস্তায় মারামারি দেখলে,
না দেখার ভান করি-
নিজের সাথে অন্যায় হলে মেনে নিই।
এই আমিই কখনো,
বিদ্রোহের মুখ হয়ে উঠি।
প্রত্যেকটা চেতনা আজ আমি,
নারী-পুরুষ-তৃতীয় লিঙ্গের সবাই আজ আমি;
ঘাস থেকে শিলিং এর টিকিটিকি,
অথবা নারকেল গাছের গা ধরে বয়ে চলা পিঁপড়ে,
কিংবা তোমার বাড়ির সখের দামী আসবাব।
এর প্রত্যেকটা আমি।
আবার কেউ আমি নই।
১১
ঠিক কি সবাই, নাকি কেউ নয় বহুব্রীহি
কে ঠিক, কে ভুল এই নিয়েই চলছে জীবনে যুদ্ধ -
ভাঙা জানালায় ইশারা দিয়ে আলোর পথে বুদ্ধ।।
১২
দেশবাসীর সেবা করতে রাষ্ট্র মানুষ খুন করে,
দেশসেবার প্রতিযোগিতায় পার্টিকর্মী মরে।
১৩
বিজয়ীর হাত সবাই ছুঁতে চায়,
হেরে যাওয়া চোখে মন দিয়ে
যে নিঃস্ব জীবন কাটায় -
তাদের জয়গান হোক।
কবিতা সবাই লেখে,
কবি হয় কয়জন?
সবাই চায় পারফেক্ট জীবন,
ক্লাস পাঁচ থেকে আমরণ -
অপূর্ণতার শিশিরে ভেজা ঘাসে,
নাকি খালে পায়ে হাঁটতে নেই।
যে সাহস করে নিঃস্ব হতে চায়,
তাদের জয়গান হোক।
সবাই সখের বোহেমিয়ান ট্রাভেল ব্লগার,
ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ভরে ওঠে-
বোহেমিয়ান জীবনের কাহিনী তে মেতে।
যে সাহস করে যাযাবর একা,
মাসের পর মাস -
পকেট ফাঁকা,
তাদের জয়গান হোক।।
১৪
ডাক্তার কে ডাক্তার, পুলিশকে পুলিশ -
উকিলকে উকিল ভেবে গেলে।
এদেরকে মানুষ ভাবলে কবে?
যাকে মানুষ হিসেবে চেনোনা,
তার কাছে মানবিকতা আশা করতে নেই।
আসলে নিজেও মানুষ হিসেবে নিজেকে জানো নাকি -
তুমি কোন রঙীন রাজনীতির সত্যে বিশ্বাস করো।
বিশ্বাস করো একমাত্র তোমার ভগবানই মসনদে এলে -
পৃথিবীতে সাম্য আসবে।
এইদিকে কে নেবে মানুষ সেবার গণতান্ত্রিক অধিকার-
লড়াই চলে।
এ লড়াই থামার নয়, থামবেও না।
রক্ত বয়, তবু সাম্য আসেনা।
ভগবানও প্রশ্ন করে -
তুমি নিজেকে মানুষ হিসেবে চেনো নাকি,
তুমি কোন ধর্মের জলে পা ধোও!!??
কেউ নিজেকে মানুষ বলে না আর -
ঠিক না ভুল, সাদা না কালো ;
ডান না বাম, মন্দ না ভালো -
এই বাইনারির ফাঁদে তৃতীয় বিশ্ব।
কেউ কাউকে মানুষ ভাবেনা আর।
১৫
জীবন খুব রূক্ষ আমি জানি,
তবু মনে রোমান্স আনি,
যেভাবে রোজ সকালে সূর্য ওঠে এক নতুন আশা নিয়ে,
যেভাবে রোজ নদী বয়,
পাখি ডাকে -
আমিও সেখানে এক কবি পালতোলা..
তুমি যখন ব্যালকনিতে চুল খোলা -
একশ মা-ইল দূর থেকে আমি দেখবো চোখ বুজে,
চোখের দেখা মিছে বাঁধন খুলে -
বাঁধন ছাড়া বাঁধন গেলো মিলে,
সেই হাওয়ায় ভেসে গিয়ে,
জ্যোত্স্না রাতে ভিজবো।
অনেক বাঁধন মাঝেও তুমি মানবে তোমায় একা -
তোমার শিথিল ডোপামিনের কারণ আমি লিখবো।।
১৬
তুমি একদিন হাসলে,
আমি হাসলাম।
তুমি একদিন মাথা নীচু করে পেরোলে,
আমিও।
তারপর তুমি হাই র্যাংক এ চলে গেলে,
আমি ও প্রেমিকা পেলাম।
একদিন বুঝলে আসলে দুজনেই হেরে গেছি,
আমি ব্রাত্য হলাম।।
১৭
এক এক করে সবাই চলে গেছে,
যে মেঘ দেখে চিঠি লিখতাম , চলে গেছে -
যে আকাশের দিকে হাঁ করে চেয়ে তারা গুনতাম
সেটা কংক্রিটে মোড়া।
যে গাছের তলায় বুক ভরে নিতাম সবুজ নিঃশ্বাস -
সেখানে পুলিশ পাহারা দেয়।
অতীত চলে গেছে, বন্ধু চলে গেছে,
গান লেখার সংগী চলে গেছে,
ধৈর্য চলে গেছে, সব শেষে তুমি ও চলে গেছো।
পড়ে আছি শুধু আমি আর আমার কঙ্কাল -
নিঃশব্দে নিঃশেষ।
তবুও এ মনে পুলক অশেষ,
যে হাত জাপটে ধরতো সে চলে যেতে সামলেছি,
যে আমার কবিতা শুনে কেঁদেছে -
সেও অন্যের হাত ধরে জানিয়েছে বিদায় সম্ভাষণ।
জানিনা আজ তবে কেন এত কষ্টের কথা বলো-
তুমি নিজের পথে নিজের জন্য চলো।
আমার জন্য এ গাছ ফুল ফল পাখি রাখা থাক -
আমি এ সবার। ।
১৮
গাছ, ফল-ফুল, আকাশ-বাতাস-পাখি ;
আমাকে দেখাতে হবে আমি কত সুন্দর -
তাই আরেকটু রোদ পড়ুক ফেশ ওয়াস করা গালে।
গাছ, ফল-ফুল, আকাশ-বাতাস-পাখি ;
আমাকে দেখাতে হবে আমি কত জানি -
তাই ডিগ্রীর জন্য জাল ফেলা, মন্দ কপালে।
গাছ, ফল-ফুল, আকাশ-বাতাস-পাখি ;
আমাকে দেখাতে হবে আমার দাম কত-
হিসেব কষে কথা বলবো আমি,
কীটস্ কে কীটনাশক দিয়ে মেরে ফেলেছি।
গাছ, ফল-ফুল, আকাশ-বাতাস-পাখি ;
আমাকে দেখাতে হবে আমার শিল্প -
বিজ্ঞাপনের বাজারে কে খোলা আকাশে
আপনমনে জীবনানন্দ হতে চায়?
১৯
কিছু জিনিস ভেঙে গেলে আর আগের মত ফেরেনা,
সে ফিরে আসতে চাইলেও,
এমন কিছু ঘটে যাওয়া স্মৃতি,
কোন রাবারে মোছেনা -
আর ফেরানো যায়না।
ছোটবেলায় যে খেলনা গাড়ি ভেঙে গেছিল,
স্কুলের কোন এক বন্ধু যার নাম ভুলে গেছি,
কথা মনে আছে।
কলেজের কোন এক ঠিক নিজের মত ব্যথিত হৃদয়,
কাউকে আর ফেরানো যায়না।
মনকে এই সহজ হিসেব বোঝানো যায়না,
অযথা মেঘের মত জমে থাকে একলা মাঝরাতে।
কবিমন কাঁদতে চায়,
কপালে বন্দুক ঠেকায় সৈনিক।
কান্না ভুলে কবিতা লিখে যায়।
২০
বিলাসবহুল ফ্ল্যাট চাওয়ার মাঝে,
কয়েকটা কবিতা চাই তোমার কাছে।
আমি এমন মেয়ে,
যার পার্সে শোকানো ফুল রাখা আছে।
ওকে কিনে দিও শাড়ি,
দোতলা ঘর, দামী গাড়ি।
আমার জন্য বাঁচিয়ে রেখো
দুমুঠো স্নিগ্ধ নিঃশ্বাস।
নিঃসংগ চাঁদের সবুজ পৃথিবী।।
অসম্ভব ভালো
ReplyDeleteধন্যবাদ
DeleteKhub e valo ...
ReplyDeleteধন্যবাদ
Delete