Sunday, May 26, 2024

প্রবন্ধ ১ - জীবনের মানে কি?

 প্রশ্নটা খুব সহজ। উত্তরটাও সবাই কম বেশি জানে। এই যে আমরা পড়াশোনা করছি। স্নাতক, স্নাতকোত্তর ইত্যাদি ইত্যাদি, কেউ দিনরাত এক করে পরিশ্রম করছে। সবের শেষে জীবনের মানে কি? প্রেম, বিয়ে, বংশগতি , সংসার নাকি জ্ঞান, গবেষণা? একটা সময়ে গিয়ে বোঝা যায় জীবনের মানে এসব কিছুই না। তাহলে?  আমার জীবনের মানে বোঝার আগে 'আমি' কে বুঝে নেওয়া দরকার। কে 'আমি'? আমার শরীর 'আমি' নয়। আমার মন 'আমি' নয়। 'আমি' শরীর বা মনের দ্বারা পরিচালিত হয়না। বরং উল্টোটা সত্যি। 

গীতার ভাষায় - " অজো নিত্যঃ শাশ্বতোহয়ং পুরাণো ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে।। " মানে - এই আত্মা শাশ্বত এবং পুরাতন, শরীরের হনন হলেও ইহা জীবিত থাকে।

আমি তাহলে চেতনা, গীতার ভাষায় আত্মা।  এই যে ইন্টারনাল ক্যাপসুলের পেছনের বাহু দিয়ে যে চেতনার তার গিয়ে সোমাটোসেনসরি কর্টেক্সে রিলে করে তার বাইরেও চেতনা হয়। তাকে এক্সট্রাসেনসরি পারসেপশন বলে। যারা গভীর ভাবে জীবনকে,  অনুভূতিকে বোঝার চেষ্টা করে তাদের এটা ধীরে ধীরে সংগঠিত হতে থাকে। তার জন্য তাকে তার চেতনাকে এক্সট্রা ডাইমেনশনে নিয়ে যেতে হয়, যাতে সে একটা ইউনিভার্সাল চেতনার সাথে মিলিত হতে পারে। একে অনেকে ভগবান বলে, কেউ আল্লাহ বলে, কেউ যীশু বলে। বাউল তত্ত্বে ইহাকে কৃষ্ণ চেতনা বলে।  তবে জীবনের উদ্দেশ্য এটাই - সে তার শরীরের তার-বিন্যাসের উপরে উঠে এক্সট্রাসেনসরি পারসেপশনকে খুঁজে পাক।  বিজ্ঞান এখনো এই চেতনাকে ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেনি। তাই একে নকল বিজ্ঞান আখ্যা পেতে হয়েছে। কিন্তু ইহা সত্য। আমাদের শরীর, মন, আমাদের রিয়েলিটি র থেকেও ইহা সত্য। হয়তো একমাত্র পরম সত্য। একদিন নিশ্চয়ই বিজ্ঞান এর গূঢ়তত্ত্ব অনুসন্ধান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। মানুষ নিশ্চয়ই ভাবতে পারবে,  যে সে কিভাবে ভাবে? সেটাই হবে আসল 'থিওরি অফ এভিরিথিং। ' মিউজিক হল একটি মাধ্যম। জ্ঞান অর্জন একটি মাধ্যম। ভক্তি একটি মাধ্যম। সাধনা একটি মাধ্যম। যৌনতা, বংশগতি একটি মাধ্যম। কাজ একটি মাধ্যম। ভ্রমণ একটি মাধ্যম। 

জীবনের মানে হল কোন এক মাধ্যমের দ্বারা এই ব্যক্তি চেতনাকে সমষ্টি চেতনাতে যুক্ত করা। আর কিছুই নয়। এটি আমার মত, আমার বিশ্লেষণ। তার মানে অন্য মতের প্রতি আমি বিরূপ নই। তারাও এক ব্যক্তি চেতনার ফসল। একদিন তারাও আমার কমরেড হবে। 'যত মত, তত পথ।' All path leads to Rome.. 

No comments:

Post a Comment

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...