Sunday, July 29, 2018

Vaccine

স্থান - National Institute of health , Bethesda, Maryland, জুলাই, ২০১৪ ...

অন্ধকারে কিছু ছায়া ঘোরাফেরা করছে। হঠাত একজন আওয়াজ করে উঠলো। 'ওহ মাই ফিংগার, ফাক্।' হাতের গ্লাভস্টা খুলতেই একটা রক্ত আর ঘামের ফোঁটা আর একজনের হাতে ধরে রাখা বস্তুতে পড়লো। আর একজন বললো 
- হে ডেভিড, একবার দেখে নাও বেবি ঠিক আছে কিনা ? আমারটায় ঠিক আছে।

ডেভিড একবার বস্তুটা খুলে দেখে নিল। রক্ত আর ঘাম থেকে কিছু ব্যাক্টেরিয়া আর ফাজ ভাইরাস ওই বস্তুর মধ্যে প্রবেশ করলো। হঠাত সেই মুহূর্তে একটা পুলিশের ভ্যানের সাইরেনের আওয়াজ পাওয়া গেল। ওই অবস্থাতেই তাড়াহুড়ো তে পালাতে গিয়ে ডেভিড হোঁচট খেয়ে পড়লো। তার হাতের বস্তু থেকে একটু কাঁচের মত বস্তু মাটিতে ঠোক্কর খেলো। ব্যাক্টেরিয়া আর ফাজ ভাইরাস প্রবেশ করলো স্মলপক্সের গুহায়। 'আমার মনে হয় পাত্রে চিড় ধরেছে। ' ডেভিড চেঁচিয়ে উঠলো। 
'আমরা পাত্র পালটে ডেলিভারি দেবো। এখন চলো '

********

স্থান - বায়োসেফটি লেভেল-৪ ল্যাব, State Research Center of Virology and Biotechnology VECTOR, Russia, জুলাই, ২০১৪

বিজ্ঞানী ড. ইউগুশি পেপারে একটা খবর দেখে চমকে গেলেন। আমেরিকার ম্যারিল্যান্ডে এফ.ডি.এ ল্যাবে স্মল পক্সের কিছু ভায়াল পাওয়া গেছে। ফোন করলেন কাউকে, হালকা হেসে জানতে চাইলেন - কোড ৯১৪, বেবি কবে আসছে আমাদের এখানে ? আমাদের ভ্যাকসিন তৈরির টিম রেডি। 

******** 
স্থান - ভারতের একটি গ্রাম

'কি করছো ? ' প্রায় এক সপ্তাহ পর ফোনে প্রেমিকার এই প্রশ্নের কি উত্তর দেওয়া উচিত ভেবে পেলোনা সৌমিত্র।
 অনেক অভিমান ভরা গলায় বললো 
- ' এটাই ভাবছিলাম আমি সিংগেল না কমিটেড ?? ' 
- দেখো তুমি আবার একি কথা বলছো, তুমি তো জানো আমি একটা খুব কনফিডেন্সিয়াল রিসার্চে আছি। এই রিসার্চে কিছু করতে পারলে আমার দেশে আমি যেখানে চাইবো সেখানে আমাকে লুফে নেবে। আমরা তখন একসাথে থাকবো। 
- হুহ্, লাস্ট এক বছর ধরে এটাই শুনে আসছি, যে কটা দিন রাশিয়া, তারপরেই ভারতে আসবেন মিস রোশনি, সারা জীবন। এত কিসের কাজ।
 - দেখো তোমাকেও বলেছিলাম বিদেশে আসতে, কিন্তু তোমার সেই দেশী সেন্টিমেন্ট। দেশের জন্য কাজ করবো। গ্রামে ডাক্তারি করবো। আর তুমি যদি সত্যিই জানতে চাও আমি নিজেই কিছু জানিনা, আর যেটুকু জানি ফোনে বলতে পারবোনা। আমাদের সবার ফোন ট্যাপ হয়। 
- ফাইন, হোয়াট আ রিলেশন ! শোন আমি আসছি রাশিয়া। এক মাসের মধ্যে।

ফোনটা কেটে দিল সৌমিত্র। পেপারটা খুলল আজকের। হেডিংটা দেখে চমকে গেল। আমেরিকা আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের হাত মেলানোর ছবি প্রথম পাতায়, আর উপরে লেখা দ্বিতীয় গাল্ফ ওয়ার কি আসছে ? প্রতিবেদন টা পড়ে বুঝলো, গাঁজাখুরি বলে উড়িয়ে দেওয়া যায়না কথাটা। গোপন সূত্রে খবর, আমেরিকা আর রাশিয়া হাত মিলিয়ে একটা নতুন অস্ত্র গোপনে ইরাক, আরবের দেশ র উপর প্রয়োগ করবে। তারপর সব তেলের খনি সব চলে যাবে এই দুই শক্তির দখলে। অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে আবার চাংগা হয়ে উঠবে দুই দেশ। তারপর গোটা পৃথিবী এদের পায়ের তলায়। নিজের মনেই হাসল সৌমিত্র। রোশনি রাশিয়া তে যবে থেকে আছে, এই বাইরের খবর গুলো ভালো করে খোঁজ রাখে সে। সে জানে আমেরিকা আর রাশিয়া এমন দুটো শক্তি, পৃথিবীতে এদের অসাধ্য কিছু নেই। আর এরা দুজন মিললে পৃথিবী ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। তারপর অবশ্য নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মরবে। এর মধ্যে যদি উ: বা দ: কোরিয়ার মত কিছু পাগল দেশ আণবিক/ পরমাণবিক শক্তি প্রয়োগ করে ফেলে তাহলে এ পৃথিবীর আর কিছু বাকি থাকবেনা। যে কজন মানুষ বাঁচবে আবার সেই আদিম যুগে ফিরে যাবে। এইসব ভাবতে ভাবতে সে জীবনানন্দ আপন মনে আওড়াতে লাগলো - 
"অদ্ভুত আঁধার এক আসিয়াছে পৃথিবীতে আজ, 
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা; 
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই-প্রীতি নেই-করুণার আলোড়ন নেই
 পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া। 
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি, 
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয় মহৎ সত্য বা রীতি,
 কিংবা শিল্প অথবা সাধনা 
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।"

******

স্থান - রাশিয়ার একটি রেস্তোরাঁ

একটি টেবিলে একটি যুগল খেতে বসেছে।
 - তারপর বলো এবার তোমার রিসার্চ কি নিয়ে, কি এমন কনফিডেনসিয়াল ? 
- আস্তে। কেউ জানেনা আশে পাশে কোন স্পাই আছে কিনা। 
- দেখো রোশনি এটা কিন্তু ড়িলিউশান অফ পারসিকিউশন। 
- আচ্ছা ডিলিউশান ? ওই দেখো পাশের টেবিলে একজন আমাকে ল্যাব থেকে পিছু করছে। 
- হম্, কিন্তু কিসের এত কনফিডেন্সিয়াল রিসার্চ ? 
রোশনি একটা টিস্যু পেপারে লিখে দিল - স্মল পক্সের একটা মিউটেটেড ভারসান তৈরি হয়েছে, তার উপর কোন একটা কারণে ভ্যাকসিন কাজ করছেনা। তার উপর রিসার্চ, আমেরিকা আর রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে।
 - কিন্তু এটা এত কনফিডেন্সিয়াল কেন ? 
            টিস্যু পেপারে লিখল সৌমিত্র। রোশনি লিখলো জানিনা। অল্প কিছু খেয়ে তারা উঠে পড়লো। টিস্যু পেপার টা পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিলো, মুড়ে। ওরা চলে যেতেই ওই অজানা ব্যক্তি ডাস্টবিন থেকে টিস্যু পেপার খুলে দেখলো। একটা ফোন করলো - স্যার, বেবির খবর বাইরে লিক হয়ে গেছে। 
"ওই দুজনকে জ্যান্ত তুলে নিয়ে এসো "
 ওপাশ থেকে অজানা কন্ঠ উত্তর দিল।

*****

স্থান - রাশিয়ার একটি গোপন আর্মি বেস ক্যাম্প

চোখ খুলতেই মাথাযন্ত্রণা টের পেল সৌমিত্র। চোখ খুলে দেখলো রোশনি একজন মিলিটারি ড্রেসের লোকের কাছে কান্নাকাটি করছে। সৌমিত্র র চোখ খুলেছে দেখে, লোকটি বললো 
- ডা: সৌমিত্র রে। অসাধারণ ট্যালেন্টেড, কিন্তু পড়ে আছে ইন্ডিয়ার কোন নোংরা কোণে। আর তার বউ কে পাঠিয়েছে রাশিয়ার ল্যাবে রিসার্চ করতে।

সৌমিত্র উত্তর দিল 
- আপনি কে? আমাদের কেন এখানে এনেছেন? 
- বলছি বলছি। আজই তোমাদের শেষ দিন। তার আগে সব জেনে যাও। আপনি খুব বুদ্ধিমান ডা: রে। নাহলে এই প্রশ্ন টা আপনার মাথায় স্ট্রাইক করতোনা যে কেন এত কনফিডেন্সিয়াল। আমি কে সেটা না জানলেও চলবে। আপনি নিশচয়ই জানবেন আমাদের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হাত মিলিয়েছেন। 
- হ্যাঁ। 
- এই দুই দেশ সব তেলের খনি নিজের অধিকারে করতে চায় গোপনে যাতে রাষ্ট্রপুঞ্জ কোন টের না পায়। জানেন অস্ত্র কি? 
- না। নীরব অস্ত্র কোন। বোমা তো হবেনা। নইলে সবাই বুঝে যাবে। 
- এক্জাক্টলি, আমাদের অস্ত্র হল বায়োউইপন। স্মল পক্স ভাইরাস ইরাকের বাতাসে, খাবারে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। কে ছড়িয়েছে কেউ জানতেও পারবেনা। কিন্তু মুশকিল হল, আমেরিকার ল্যাব থেকে ভাইরাসের স্যাম্পেল চুরি করতে গিয়ে একটা স্যাম্পেল কোনভাবে কন্টামিনেটেড হয়ে মিউটেট করে। এখন সেই ভাইরাসে ভ্যাক্সিন কাজ করেনা। তাই যতদিন না সেই ভ্যাক্সিন আমরা হাতে পাচ্ছি, আমরা দ্বিতীয় সাইলেন্ট গাল্ফ ওয়ার শুরু করতে পারছিনা। আমাদের ল্যাবে অলরেডি দুজন সায়েন্টিস্ট, তিনজন কর্মী স্মল পক্সে মারা গেছে। এই ভাইরাস এখন শুধু ম্যালিগনান্ট আর হিমোরহেজিক স্মল পক্স করে। মাইল্ড ডিজিজ করেনা। জেনে গেলেন, এবার মরতে প্রস্তুত হন।
 - আচ্ছা আমি যদি বলি আমায় বারো দিন সময় দিন আমি এর ভ্যাক্সিন বের করে দেবো।
                              সৌমিত্রর কথায় লোকটির চোখ চিকচিক করে উঠলো। 
"ওকে এটাই যদি আপনাদের শেষ ইচ্ছে হয়, তাহলে তাই হোক। কোইন্সিডেন্টালি, স্মল পক্সের ইনকিউবেশন পিরিওড ও বারো দিন। আজ আপনাদের শরীরে ওই মিউটেটেড ভাইরাসের স্যাম্পেল ইঞ্জেক্ট করছি, বারোদিনের মধ্যে না কিউর বের করতে পারলে আপনারা মারা গেলেন। "

******

১২ নং দিন, রাত দশটা, স্থান- রাশিয়ার একটি ল্যাব,

"আর কয়েক ঘন্টা তারপরেই স্মল পক্স আমাদের শরীর শেষ করে ফেলবে, আমরা মরে যাব, আজ শেষ দিনে তোমাকে তুই করে বলবো সেই শুরুর দিন গুলোর মতো " বলে হা হা করে হাসতে লাগলো রোশনি। 
"হুম্ গাঁজাটা প্রথমবার ভালোই কাজ করেছে বুঝতে পারছি তোর শরীরে" সৌমিত্র বললো। 
- " বাজে না বকে, কিছু উপায় বের কর, ইডিয়ট। তখন তো বেশ বড় মুখ করে বলে এলি বারো দিনের মধ্যে... আমরা বছর ভর উদয় অস্ত পরিশ্রম করে কোন উপায় পেলাম না, আর উনি বারো দিনে... " 
- " ভাব্ , আমরা আমাদের জীবনের শেষ বারোটা দিন একসাথে কাটালাম ঘড়ি দেখে সময় গুনে । আমরা চাইলেও পারবো না পালাতে। চারিদিকে গার্ড। "
 - " সাট আপ জাস্ট থিংক। আমাদের হাতে খুব কম সময় বেঁচে আছে। " 
- "বারোদিন বিভিন্ন প্রাণীতে তো আমরা আন্টিবডি সৃষ্টি করার অনেক চেষ্টা করলাম হানি, লাভ তো হল না। লাইফ আর লাভ দুটোই সারভাইভ করার ঠিক রাস্তা খুঁজে নয়। এই স্মল পক্সের স্যাম্পলটাও সেরকম। " 
- আমি মরতে চাইনা, আমি তোমার সাথে বাঁচতে চাই। কত স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমাদের একটা বাংলো থাকবে। আমাদের ছেলে হবে। সে নাসার সাইন্টিস্ট হবে।
 - নাসা না ইসরো। 
- সেই দেশী সেন্টি। 
- আর ছেলে না মেয়ে।
 - যেই হোক, আমি বাঁচতে চাই, আমাদের কত প্ল্যান ছিল বিয়ের পর।
 - কে তুমি ? 
- মানে?
 - Time kills us everyone .. what is reality ? Who are you ? I just don't exist in some dimensions in this multiverse .. I am a prisoner of this time loop .. Every loop leads to different possibilities , probabilities.. One after another time loops .. repeating the same incident but different ways and results .. What is death ? It's just projection into another dimension leaving our physical body .. along a time loop .. Honey, when I met you i felt deja-vu .. as if it occurred earlier .. so even if we die we will meet again in different form, in different time loop, ডিফারেন্ট ডাইমেনসান with different probabilities and results .. আমাদের তখন ছেলে বা মেয়ে হবে। আমরা যদি এক না হতে পারি, তার মানে আমাদের ভালোবাসা মিথ্যে নয়, হয়তো এটা সেই আমাদের ডাইমেনসান নয় বা টাইম লুপের সেই ব্রাঞ্চ টা নয়। 
- তোর মাথা আর তারকাটা নেই, আর খাস না গাঁজা, পুরো ওয়াই-ফাই হয়ে গেছিস। 
- ওয়াইফের সামনে ওয়াই-ফাই হয়েছি। অসুবিধে কোথায়।
 -আচ্ছা আমি এখুনি ভাবছিলাম, আমাদের তো এতক্ষণে কিছু না কিছু উপসর্গ দেখা যাওয়ার কথা, কিছুই সেরকম হচ্ছেনা কেন? 
- এসব বাদ দে, মৃত্যুর সামনে অনেক কবিতা মাথায় আসছে শোন । 
খোলা চ্যাটবক্সে শব্দের ভীড়, 
লেখা হয় খুব দ্রুত, 
আবেগে মন্ত্রপুত, 
জানি শেষে সব মুছে দেবো,
 তোমার কাছে তো সবই অর্থহীন। 
তবু বারবার লিখি, অদৃশ্য কান্নায় রংগীন।

- ধুস এটা ঠিক রোমান্টিক হলনা। 
- আচ্ছা, এটা শোন। 
বহুদিন কাব্য আসেনা, 
শুষ্ক পাহাড় পাড়ি দিতে দিন ফুরায়, 
বিক্ষিপ্ত মন মুক্তিপণ খোঁজে, 
তবু কাব্য আসেনা। 
তারপর একদিন কালো মেঘে, বৃষ্টিপাত।
 তুমি ঝোড়ো হাওয়া হয়ে এলে। 
জানালায় ছিলো দারুণ আঘাত, 
তবুও শিহরণ প্রতিটা সেলে।
 খিদে পেটে রোদে রোদে সারাটা দিন, 
যখন টাকা নিজের দাম বোঝায়, 
রাতে ঘরে ফিরে আসার ডাক দেয়,
 তোমার লিখিত খোঁজ-খবর। 
নিখোঁজ প্রেম দানা বাঁধে, 
যখন নিজের ভুলে যাওয়া কথা, 
তোমার দেওয়ালে কাঁদে। 
অবিশ্বাসী নাস্তিকও তখন ধূপ জ্বালায়, 
ভালোবাসার ফাঁদে। 
তবুও নীরবে গোপন, 
অস্ফুট স্ফুরিত আশা, 
তোমার মুখে রোজ তবু শুনি, ভালোবাসা, ভালোবাসা। 

রোশনি !!! 

- কি হল ? 

- জাস্ট একটু আগে কি বললি ? 
- আমি মরতে চাইনা ? 
- না তার পরে। 
- আমাদের কিছুই হচ্ছে না কেন এখনো। 
- হ্যাঁ। হোয়াট আ ফুল উই আর। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি আর ঘরের পাশে ধানের উপর শিশির বিন্দু খুঁজে পাইনি।
- মানে? 
- হানি, এই প্রোজেক্টে কজন মারা গেছে ইনফেকশনে আর কজন মারা যায়নি তাদের ডিটেল কেস হিস্ট্রি চাই। এক্ষুনি। দ্যা ফ্যাক্টর উই আর সার্চিং ইজ ইন আওয়ার বডি, হানি। 
- হোয়াট্ !!!?

***** 
পরের দিন
 স্থান -রাশিয়ার আর্মি বেস ক্যাম্প

- আই আম গ্ল্যাড আন্ড সারপ্রাইজড্ টু সি বোথ অফ ইউ আলাইভ। এনি প্রোগ্রেস ড. রে?
 - হ্যাঁ।
 - কি বলছেন? বারো দিনে !! 
- আমি নই, আপনার বিজ্ঞানী রোশনি না থাকলে এটা সম্ভব ছিল না। আর আমি শুধু পথ দেখাবো আর সেই পথের পক্ষে প্রমাণ দেবো। এর পর আপনাদের দায়িত্ব। তবে একটাই শর্তে, যদি বেঁচে থাকি আমাদের মুক্তি চাই। 
- আই মে বি আ ভিলেন টু ইউ। কিন্তু আমি একজন হনেস্ট ভিলেন। বৃহত্তর স্বার্থে আপনাদের সাথে এরকম করতে হয়েছে। প্লিজ টেল মি স্যার, আবাউট দা ওয়ে। 
- দেখুন যারা এই প্রোজেক্টে মারা গেছে স্মল পক্স ইনফেকশনে তাদের প্রত্যেকের কেস হিস্ট্রি আমরা দেখেছি। ওদের মধ্যে অনেক কমন ফ্যাক্টরের মধ্যে একটা কমন ফ্যাক্টর হল, ওরা সবাই এমন দেশে বড় হয়েছে, যেখানে টিউবারকিউলোসিস এনডেমিক নয়। ফলে ওদের শরীর কখনো এক্সপোজড্ হয়নি টিবি তে। ওদের শরীরে কোন প্রাইমারি কম্পলেক্স নেই টিবি ইনফেকশনের। 
- সো হোয়াট?
 - কিন্তু এবার আমরা তাদের কেস হিস্ট্রি দেখেছি যারা স্মল পক্সের ওই স্যাম্পেলে ইনফেকটেড হয়েছে কিন্তু তারা মারা যায়নি। বরং যেখানে স্মল পক্সের কেরিয়ার হয়না। ওরা সেই ক্যারিয়ার স্টেট এ চলে গেছে। ওদের মধ্যে কমন হল ওরা এমন দেশে বড় হয়েছে যেখানে টিবি এন্ডেমিক। ওদের প্রত্যেকের ফুসফুসে ঘন্ ফোকাস রয়েছে। 
- হোয়াট ইজ দিস রাবিশ্। হোয়ার ইজ দ্যা ওয়ে ?? 
- প্লিজ লেট মি ফিনিশ। এখান থেকে একটা হাইপোথসিস ড্র করা যায় যে, স্মল পক্স ওদের শরীরে গিয়ে আন্টিবডি আর ইমিউন সেল থেকে বাঁচতে এমন একটা জায়গা খোঁজে যেখানে সে নিরাপদ। আর ভুল করে তারা ওই ঘন্স ফোকাস কেই ভেবে ফেলে সেই নিরাপদ জায়গা। এই মিউটেটেড স্মল পক্সের একটা ফিচার হল সে নিউরামিনিডেজ, হায়ালিউরুনোডেজ এইসব এন্জাইম বের করে।ঘনস্ ফোকাসের স্পেসিফিক কোন একটা ফ্যাক্টরের পিছু নিয়ে স্মল পক্স ওই এনজাইমের সাহায্যে ফোকাসে ঢোকে, ওখানে বাসা বাঁধতে শুরু করে, কিন্তু ওই ফোকাসে এমন এমন কোন ফ্যাক্টর থাকে যেটা ওদের আর ওখান থেকে বেরোতে দেয়না। তাই ওই ভাইরাস আর ব্লাড স্ট্রিমে না গিয়ে ওখানেই বাসা বাঁধে। মাঝে মাঝে কিছু ভাইরাস কে আর ফোকাস আটকে রাখতে পারেনা। তখন সেই হিউমান বিইং টেম্পোরারি কেরিয়ার হয়ে যায়। তাই উপসর্গ আসে, কিন্তু মরেনা। 
- কিন্তু এটা তেও এই স্মল পক্স কে আটকানোর উপায় পেলাম না। 
- এখনো আমি তো শেষ করিনি। যাদের আগে আক্টিভ ইনফেকশন অফ টিবি হয়েছে, তাদের শরীরে যে প্রচুর আন্টিবডি তৈরি করার মেমোরি সেল তৈরি হয় সেটাই এই মিউটেটেড স্মল পক্স কে টিবি ব্যাসিলিতে থাকা কোন একটা কমন ফ্যাক্টর এর জন্য টিবি ব্যাসিলি চিনে বসে আর মেরে ফেলে। 
- হোয়াট আ বুলশিট স্টোরি। ক্যান ইউ প্রুভ ইট্ ? 
- ইয়া। প্রমাণ আপনার সামনেই দুজন দাঁড়িয়ে। আমাদের দুজনের শরীরে স্মল পক্সের জন্য একটা ফোস্কাও বেরোয়নি। আর আমাদের দুজনেই ইন্ডিয়ান। যে দেশ টিবির খনি। আমাদের দুজনেরই সৌভাগ্যজনক ভাবে টিবি হয়েছে আগে। 
- ওহ মাই গড, ইউ আর আ জিনিয়াস। ইউ বোথ আর ফ্রি টু গো। গো মেক ইউর লাইফ। 

****

দু মাস পর স্থান - ভারতের একটি গ্রাম

ফোনটা রেখে সৌমিত্রর দিকে ফিরে তাকালো রোশনি। 
- "কি হয়েছে? " সৌমিত্র জিজ্ঞেস করলো। 

- আমাদের থিওরি বেস করে এক্সপেরিমেন্ট সফল। They injected in a Guinea pig BCG vaccine followed by that virus sample . Then they extracted that confused non-specific antibody . ইউ সি স্মল পক্স ফাউন্ড ইটস্ ওয়ে। আওয়ার ইমিউন্ সিস্টেম অলসো হ্যাভ ফাউন্ড দা ওয়ে।

- কিন্তু লাভ, আমাদের কি হবে? 
- মানে? 
- উড্ ইউ লাইক টু বি মাই ভ্যাক্সিন, ম্যাডাম্ ? ফরেভার। 
- ইউ আর জাস্ট..... হা হা হা। বদমাশ ভাইরাস কোথাকার। 
- ভাইরাস তাও ভালো ভাই বলিস নি!! 
- হা হা হা।



[ Written On - 28 th July, 2017]
[Special Thanks to - Dr Swaraj Mandal] 

2 comments:

  1. Great work!!!! The first post on this blog shoots up the expectations.... Well done!

    ReplyDelete

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...