- আছে ?
- কত র মাল চাই ?
- ৩৫
গাঁজার পুরিয়া টা নিয়ে ট্রেনে উঠলেন যুবকটি। মাঝারি উচ্চতার, উস্কো খুস্কো চুল, চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। কাঁধে ঝোলা ব্যাগ, পরনে সাদা পাজামা- ছেঁড়া কালো কুর্তা। ঝোলা ব্যাগে হাতড়ে দেখলেন। ইনসুলিন আর সিরিঞ্জটা ঠিক ঠাক আছে কিনা। উপায়টা আজকেই মাথায় এল আসলে। মাথায় এলো যখন করেই ফেলা যাক। আর ভাবনা চিন্তা করে লাভ নেই। অনেকদিন ধরে ঝুলছিল চিন্তাটা। আজ খুব সহজ সমাধান বেরোলো। একটা হোটেলে যাবে। সেখানে গাঁজা খাওয়া হবে। তারপর কিছু শেষ লেখা। এরপর বেশ দামী কলগার্ল আগে থেকে অর্ডার দেওয়া আছে। হোটেলের দালালকে বলেছে - একদম ফ্রেস মাল হলে ভালো হয়।
- কত র মাল চাই ?
- ৩৫
গাঁজার পুরিয়া টা নিয়ে ট্রেনে উঠলেন যুবকটি। মাঝারি উচ্চতার, উস্কো খুস্কো চুল, চোখে কালো মোটা ফ্রেমের চশমা। কাঁধে ঝোলা ব্যাগ, পরনে সাদা পাজামা- ছেঁড়া কালো কুর্তা। ঝোলা ব্যাগে হাতড়ে দেখলেন। ইনসুলিন আর সিরিঞ্জটা ঠিক ঠাক আছে কিনা। উপায়টা আজকেই মাথায় এল আসলে। মাথায় এলো যখন করেই ফেলা যাক। আর ভাবনা চিন্তা করে লাভ নেই। অনেকদিন ধরে ঝুলছিল চিন্তাটা। আজ খুব সহজ সমাধান বেরোলো। একটা হোটেলে যাবে। সেখানে গাঁজা খাওয়া হবে। তারপর কিছু শেষ লেখা। এরপর বেশ দামী কলগার্ল আগে থেকে অর্ডার দেওয়া আছে। হোটেলের দালালকে বলেছে - একদম ফ্রেস মাল হলে ভালো হয়।
অনেক ন্যায় করল। যাওয়ার দিন একদম সব কিছু অন্যায় করে যেতে চায়। তাই টিকিট ও কাটেনি ট্রেনের । সবাইকে টাকায় ভরিয়ে দেবে কথা দিয়েছে। ব্যাংকে যা আছে শেষ কিছু। সব কিছু হলে মালকে বিদায় করে একটা ইনসুলিনের ইঞ্জেকশন চামড়া তে না, শিরাতে । সুগার ফল করবে, পটাসিয়াম ফল করবে দুমদাম। আর তার জীবন ও। আগে চরিত্র নীচে নামাতে চায়, তারপর পটাসিয়াম। তারপর আসবে সেই মুহূর্ত - হোটেলের এক রুমে কার্ডিয়াক আরেস্ট, ব্রেন ডেথ। সুইসাইড নোটে লেখা থাকবে, 'আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।'
দেখতে দেখতে হোটেলের সেই রাত এল। হোটেলের ম্যানেজার ফোন করে বললেন - স্যার মিস বিজলী আপনার রুমে যাচ্ছে। আপনি ওর সাথেই ওর রেট ফিক্স করে নিন। আর আমাদেরকে ভুলবেন না যেন স্যার। হে হে।
দরজাটা খুলতেই অবাক হতে হল। বছর বাইশ-তেইশের একটি ফুটফুটে মেয়ে, দেখে তো শিক্ষিত মনে হয়। কি করে এল এই লাইনে। চোখে মুখে একটা চাপা উদ্বেগ ঢাকার অসহায় চেষ্টা। নাহলে ক্লায়েন্ট বিরক্ত হতে পারেন। দরজা লাগিয়ে সামনের চেয়ারে এসে বসলো সে। পা দুটো ঢাকা থাকলেও সে দুটো যে কাঁপছে নজর এড়ালো না।
হঠাৎ বলে উঠলো মেয়েটি - নিন বাবু শুরু করুন। আমি খুলবো না আপনি ?
শুনে নিজের অট্টহাসি চাপতে পারলেন না বাবু। বাবু বললেন - এই লাইনে কতদিন ?
মেয়েটি উঠে এসে স্মার্টলি বাবুকে বিছানায় ঠেলে দিয়ে বললে - সারা রাত কি এরকম মুখেই গোয়েন্দাগিরি করবেন ? মাল্লু কিন্তু কমাতে পারবেন না। মানি হ্যায় তো হানি হ্যায়।
বাবু - তা তুমি কিসের হিসেবে টাকা নাও। ওয়ান শট, টু শট নাকি ঘন্টায় নাকি রাতের হিসেবে।
- ওয়ান শট, টু শট টা কি ?
এবার আবার হেসে উঠলেন বাবু। বললেন
- বুঝলাম নতুন। কারণটা জানতে পারি। আর তোমার নামও নিশ্চয়ই বিজলী নয়।
- এসবে আপনার জেনে কি হবে। আপনার যা দরকার পাবেন।
- তুমি যদি বলো আমিও বলবো। চিন্তা নেই তোমার টাকা তুমি পাবে। আমরা দুজনেই তো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে।
- কি বলতে চান ?
- তুমি এসেছো শরীর বিক্রি করতে, আমি এসেছি প্রাণ বিক্রি করতে। এই যে সিরিঞ্জ।
- কিন্তু কেন ? আপনার তো টাকার অভাব নেই মনে হয়।
- আমার ও একি প্রশ্ন। কেন ? এই কবিতা টা শুনেছ? -
'শরীরের ভেতরও একটা জানালা আছে,
পর্দার ওপারে মন,
দুর্গন্ধে ঢাকা পড়ে যায় কেন তোমার জীবন ? '
ধুস, কিসব কাকে বলছি।
দরজাটা খুলতেই অবাক হতে হল। বছর বাইশ-তেইশের একটি ফুটফুটে মেয়ে, দেখে তো শিক্ষিত মনে হয়। কি করে এল এই লাইনে। চোখে মুখে একটা চাপা উদ্বেগ ঢাকার অসহায় চেষ্টা। নাহলে ক্লায়েন্ট বিরক্ত হতে পারেন। দরজা লাগিয়ে সামনের চেয়ারে এসে বসলো সে। পা দুটো ঢাকা থাকলেও সে দুটো যে কাঁপছে নজর এড়ালো না।
হঠাৎ বলে উঠলো মেয়েটি - নিন বাবু শুরু করুন। আমি খুলবো না আপনি ?
শুনে নিজের অট্টহাসি চাপতে পারলেন না বাবু। বাবু বললেন - এই লাইনে কতদিন ?
মেয়েটি উঠে এসে স্মার্টলি বাবুকে বিছানায় ঠেলে দিয়ে বললে - সারা রাত কি এরকম মুখেই গোয়েন্দাগিরি করবেন ? মাল্লু কিন্তু কমাতে পারবেন না। মানি হ্যায় তো হানি হ্যায়।
বাবু - তা তুমি কিসের হিসেবে টাকা নাও। ওয়ান শট, টু শট নাকি ঘন্টায় নাকি রাতের হিসেবে।
- ওয়ান শট, টু শট টা কি ?
এবার আবার হেসে উঠলেন বাবু। বললেন
- বুঝলাম নতুন। কারণটা জানতে পারি। আর তোমার নামও নিশ্চয়ই বিজলী নয়।
- এসবে আপনার জেনে কি হবে। আপনার যা দরকার পাবেন।
- তুমি যদি বলো আমিও বলবো। চিন্তা নেই তোমার টাকা তুমি পাবে। আমরা দুজনেই তো একই জায়গায় দাঁড়িয়ে।
- কি বলতে চান ?
- তুমি এসেছো শরীর বিক্রি করতে, আমি এসেছি প্রাণ বিক্রি করতে। এই যে সিরিঞ্জ।
- কিন্তু কেন ? আপনার তো টাকার অভাব নেই মনে হয়।
- আমার ও একি প্রশ্ন। কেন ? এই কবিতা টা শুনেছ? -
'শরীরের ভেতরও একটা জানালা আছে,
পর্দার ওপারে মন,
দুর্গন্ধে ঢাকা পড়ে যায় কেন তোমার জীবন ? '
ধুস, কিসব কাকে বলছি।
বিজলী -
' সূর্যের মত হতেম যদি,
সব কালো নির্বাক হয়ে যেত,
অসীমে বিলীন।
রক্তাক্ত বুকের 'পরে সময়ের মরা স্রোত,
বিকলাঙ্গ নদীতীর সেখানেও ছাপ রেখে যায়,
তবু স্মৃতিটুকু রয়ে যাক,
আমি হই আকাশ মলাট জুড়ে-
আলপিন তারা,
অজাত জন্মে হই আমি দিশেহারা।'
' সূর্যের মত হতেম যদি,
সব কালো নির্বাক হয়ে যেত,
অসীমে বিলীন।
রক্তাক্ত বুকের 'পরে সময়ের মরা স্রোত,
বিকলাঙ্গ নদীতীর সেখানেও ছাপ রেখে যায়,
তবু স্মৃতিটুকু রয়ে যাক,
আমি হই আকাশ মলাট জুড়ে-
আলপিন তারা,
অজাত জন্মে হই আমি দিশেহারা।'
- আপনি এই কবিতা জানলেন কি করে ?
- আমি বাংলা হনার্সের ছাত্রী ছিলাম। অবচেতন চ্যাটার্জী আমার আধুনিক কবিদের মধ্যে খুব প্রিয় কবি। আমি ওনার সব লেখার ফ্যান। আমার বাবা- মা এক দুর্ঘটনায় মারা যান। আমার ভাইএর অসুখ। টাকা দরকার খুব তাড়াতাড়ি। আমি অনেক জায়গায় চাকরির খোঁজ করেছি। ফার্স্ট ক্লাস নাম্বার আছে। ভালোবেসে বাংলা পড়েছি। কিন্তু তবু চাকরি পেলাম না। সোজা পথ অনেক হল। এবার তাই আজ এই পথে নামলাম। আমি নতুন হতে পারি, কিন্তু আপনাকে সব ভাবে সন্তুষ্ট করতে পারবো আমার বিশ্বাস। শুধু আপনি আমার ফিজ টা কুড়ি হাজার দিয়ে যাবেন। টাকাটা খু-খুব দরকার আমার। যদি বেশি বলে থাকি এক রাতের জন্য তাহলে আর এক রাত আপনি যেখানে বলবেন।
বলে মাথাটা নিচু করলো। আবার বলতে শুরু করলো।
অবচেতন চ্যাটার্জীর প্রত্যেকটা লেখা পড়ে আমি কেঁদেছি। এত দরদ নিয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে লেখেন। ওনার সাথে একবার দেখা করার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু হয়ে ওঠেনি । মানুষটার হৃদয়খানি অনেক বড়। একবার দেখা করে বলতাম আমার অবস্থা। উনি নিশ্চয়ই আমায় সাহায্য করতেন। কিন্তু আপনি কিসব বলছেন মরতে চান। দেখুন আমি কোন ঝামেলায় পড়তে চাইনা।
- যদি বলি আমি অবচেতন। আমার হৃদয়ে আর কোন প্রেম নেই। শুধু প্রহসন আছে। তাই কবিতা বেরোচ্ছেনা। তাই মরতে চাই। মরার আগের রাতে একটু মজা করে যেতে চাই।
মেয়েটি অবাক হয়ে তাকালো। একটু ভেবে মেয়েটি হেসে বললো - আপনি হতে পারেন না। আমার বিশ্বাস। সমাজ বিক্রি হয়ে গেলেও উনি হবেন না। যে ওরকম লিখতে পারে তার মত সত্যিকারের মানুষ আর যাই হোক এখানে আসবেন না।
বাবু এবার হো হো করে হেসে উঠলেন, বললেন
- ধরে ফেললেন দেখছি। মজা করছিলাম। কি বলবো বলুন জীবনে বেঁচে থাকার কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা। তাই। আচ্ছা আপনি তো কাউকে বিয়ে করে নিতে পারতেন। আপনার স্বামী সব দেখতো।
- আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তার সাথে কয়েকবার বাইরে দেখাও করেছি। সে আমায় চুমু খেয়ে বলেছে আমায় ভালোবাসে। বাবা-মা মারা যাওয়াতে পণের টাকা দিতে পারতাম না, ভেংগে যায়। ভালোবাসা ভেংগে যায়। অনেক খুঁজে যখন চাকরিও পেলাম না। ভাবলাম সমাজটাই তো বেশ্যা। আমিও নাহলে কয়েকটা রাতের জন্য হলাম।
- বুঝলাম, গাঁজা খাবেন ?
- আমাকে হঠাত আপনি করে কথা বলছেন কেন ?
- আপনি যেটা ডিজার্ভ করেন তাই করছি। গাঁজা ?
- আপনি তো ক্লায়েন্ট। আপনি যা বলবেন করবো। শুধু প্রাণে মেরে ফেলবেন না। গাঁজা আগে কখনো খাইনি। তবে আপনি বললে খাবো। আমার দরকারও। শুনেছি গাঁজা খেলে হুঁশ থাকেনা সমাজের।
- ধরে ফেললেন দেখছি। মজা করছিলাম। কি বলবো বলুন জীবনে বেঁচে থাকার কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা। তাই। আচ্ছা আপনি তো কাউকে বিয়ে করে নিতে পারতেন। আপনার স্বামী সব দেখতো।
- আমার বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তার সাথে কয়েকবার বাইরে দেখাও করেছি। সে আমায় চুমু খেয়ে বলেছে আমায় ভালোবাসে। বাবা-মা মারা যাওয়াতে পণের টাকা দিতে পারতাম না, ভেংগে যায়। ভালোবাসা ভেংগে যায়। অনেক খুঁজে যখন চাকরিও পেলাম না। ভাবলাম সমাজটাই তো বেশ্যা। আমিও নাহলে কয়েকটা রাতের জন্য হলাম।
- বুঝলাম, গাঁজা খাবেন ?
- আমাকে হঠাত আপনি করে কথা বলছেন কেন ?
- আপনি যেটা ডিজার্ভ করেন তাই করছি। গাঁজা ?
- আপনি তো ক্লায়েন্ট। আপনি যা বলবেন করবো। শুধু প্রাণে মেরে ফেলবেন না। গাঁজা আগে কখনো খাইনি। তবে আপনি বললে খাবো। আমার দরকারও। শুনেছি গাঁজা খেলে হুঁশ থাকেনা সমাজের।
গাঁজা খেয়ে দুজনে বসলো জানালার ধারে। এসি অফ করে জানালাটা খুলে দিলেন বাবু। দুজনে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারা রাও আজ বেশ্যাবৃত্তি ছেড়ে যেন কারো শেষ ইঞ্জেকশনের অপেক্ষায়। দুজোড়া চোখের তারায় তারাদের অভিব্যক্তি হৃদয়ের রক্তস্রোতে হিন্দোল তুলছিল। বৃষ্টি নামল।
বাবু বললেন
- আমি আপনাকে স্পর্শ করবোনা। কিন্তু আমি আপনাকে যা বলবো আপনাকে শুনতে হবে। আপনার টাকা আমি দিয়ে দেবো চিন্তা নেই।
- বলুন, উত্তর এল।
মেয়েটির মাথা ঝিমিয়ে এসেছে। দূরে কোথাও একটা হাতুড়ি ঠোকার আওয়াজ ও এখন তার কানে এসে ঢুকছে। বৃষ্টি তার কানে সেতার বাজাচ্ছে। এমন সময় বাবু শুরু করলেন।
- ওই দূরে দেখতে পাচ্ছেন, একটা ল্যাম্পপোস্ট আর তার ছায়াটা কিরকম বৃষ্টির জলে ভিজছে দেখুন। আপনি অনুভব করুন আপনি ওই ছায়াটা। আপনি ও মিশে গেছেন বৃষ্টিতে। আপনি অনুভব করুন আপনি সেই বৃষ্টির ফোঁটা। অনেক উপরে অনেক্ষণ আপনাকে হাওয়ায় ভাসিয়ে রেখেছিল। তারপর আর ধরে রাখতে পারেনি রতিতৃপ্ত মেঘ। আপনি ঝরে পড়ছেন পৃথিবীর শরীরে।
বাবু বললেন
- আমি আপনাকে স্পর্শ করবোনা। কিন্তু আমি আপনাকে যা বলবো আপনাকে শুনতে হবে। আপনার টাকা আমি দিয়ে দেবো চিন্তা নেই।
- বলুন, উত্তর এল।
মেয়েটির মাথা ঝিমিয়ে এসেছে। দূরে কোথাও একটা হাতুড়ি ঠোকার আওয়াজ ও এখন তার কানে এসে ঢুকছে। বৃষ্টি তার কানে সেতার বাজাচ্ছে। এমন সময় বাবু শুরু করলেন।
- ওই দূরে দেখতে পাচ্ছেন, একটা ল্যাম্পপোস্ট আর তার ছায়াটা কিরকম বৃষ্টির জলে ভিজছে দেখুন। আপনি অনুভব করুন আপনি ওই ছায়াটা। আপনি ও মিশে গেছেন বৃষ্টিতে। আপনি অনুভব করুন আপনি সেই বৃষ্টির ফোঁটা। অনেক উপরে অনেক্ষণ আপনাকে হাওয়ায় ভাসিয়ে রেখেছিল। তারপর আর ধরে রাখতে পারেনি রতিতৃপ্ত মেঘ। আপনি ঝরে পড়ছেন পৃথিবীর শরীরে।
বাবু একটু থেমে হঠাত উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেন - দেখুন কত জোরে বৃষ্টি নামছে। বৃষ্টি আজ পাগল হয়ে গেছে। আমিও পাগল হয়ে গেছি। আমার ছটা ইন্দ্রিয় গিটারের ছটা তারের মত বৃষ্টির সুরে বাজতে চাইছে। আমি কবিতা লিখছি আবার -
যেভাবে বুড়ো বটের ঝুরি ধরে সন্ধ্যে নামে,
রংগের আদর মাখে ভেজা পাতা,
সেভাবে আমার সামনে তুমি এলে,
আবেগের হাওয়া মেখে,
পেন ধরো তুমি,
ফুটে ওঠো না-লেখা কবিতা।
রংগের আদর মাখে ভেজা পাতা,
সেভাবে আমার সামনে তুমি এলে,
আবেগের হাওয়া মেখে,
পেন ধরো তুমি,
ফুটে ওঠো না-লেখা কবিতা।
হাঁপাতে লাগলেন উত্তেজনায় বাবু। মাথা ধরে বশে পড়লেন। হঠাত বাবুর চোখ ভিজে এল। ধরা ধরা গলায় সামনের বাড়িটার দিকে আঙ্গুল তুলে বলে যেতে লাগলেন।
'সমাজ তুমিই আসল বেশ্যা, ফাঁপা,
তাই যারা আজও সত্যি হয়ে আছে,
পড়ছে ধুলোয় চাপা।'
'সমাজ তুমিই আসল বেশ্যা, ফাঁপা,
তাই যারা আজও সত্যি হয়ে আছে,
পড়ছে ধুলোয় চাপা।'
থর থর করে কাঁপতে লাগলেন উত্তেজনায় । একজন হাত-পা কাটা মানুষ হঠাত তার হাত পা ফিরে পেয়েছে যেন। সে উত্তেজনায় কাঁপছে। যে এতক্ষণ অন্য একজন ছিল। অজস্র যন্ত্রণা সেই বাবুর চোখে মুখে ঠিকরে বেরোচ্ছে। তাকে যেন কোন সাপ কামড়েছে। বিষের জ্বালায় ছটপট করছে। হঠাত কাঁদতে লাগলো, যেন সে একজন বিবাহযোগ্যা যুবতী, তাকে কেউ বিয়ের রাতে ধর্ষণ করেছে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে মেয়েটির। মানুষটা কি পাগল ? চোখ বুজে এল ঘুমে। বিছানায় মাথা এলিয়ে দিলো সে।
'আপনি কে ? ' বলে ঘুমিয়ে পড়লো মেয়েটি। অর্জুনের সহস্র তীর অজেয় ভীষ্মকে ধরাশায়ী করেছিল। আজ মেয়েটির একটি শেষ প্রশ্ন ইনসুলিনের থেকেও মারাত্মক গভীরতায় বাবুকে বিদ্ধ করলেন। কিন্তু উলটো পথে। সেই কবিতা ফিরে এসেছে অবচেতনের । অবচেতন কে?
++++
'আপনি কে ? ' বলে ঘুমিয়ে পড়লো মেয়েটি। অর্জুনের সহস্র তীর অজেয় ভীষ্মকে ধরাশায়ী করেছিল। আজ মেয়েটির একটি শেষ প্রশ্ন ইনসুলিনের থেকেও মারাত্মক গভীরতায় বাবুকে বিদ্ধ করলেন। কিন্তু উলটো পথে। সেই কবিতা ফিরে এসেছে অবচেতনের । অবচেতন কে?
++++
এতটা পড়ে থামলে থামলেন অবচেতন। লাইভ টিভি শো চলছে। সঞ্চালক ও উপস্থিত সকলে হাততালি দিয়ে উঠলেন। সঞ্চালক প্রশ্ন করলেন
- আপনার গল্পের চরিত্র, কথা সব এত জীবন্ত। এগুলো কি সত্যি ? আমরা সবাই জানতে চাই।
হাল্কা হেসে অবচেতন বললেন,
- সত্যি হলে মেয়েটি নিশ্চয়ই আমার এই লাইভ ইন্টারভিউ দেখছে। মেয়েটি যেন একবার আমার সাথে যোগাযোগ করে। দরকার ছিল। সি ওয়াজ মাই লাস্ট ইঞ্জেকশন।
- আপনার গল্পের চরিত্র, কথা সব এত জীবন্ত। এগুলো কি সত্যি ? আমরা সবাই জানতে চাই।
হাল্কা হেসে অবচেতন বললেন,
- সত্যি হলে মেয়েটি নিশ্চয়ই আমার এই লাইভ ইন্টারভিউ দেখছে। মেয়েটি যেন একবার আমার সাথে যোগাযোগ করে। দরকার ছিল। সি ওয়াজ মাই লাস্ট ইঞ্জেকশন।