Sunday, September 29, 2024

The Unknown Rebel

 না, তার নাম অত পরিচিত নয়, কিন্তু সেই অপরিচিত ব্যক্তি এখন বিপ্লবের মুখ। ঠিক আর্‌য়া স্টার্ক এর মতো। " I am No One ".. "V for Vendetta" সিনেমাটিও এই কনসেপ্ট এর উপর দাঁড়িয়ে। বিপ্লবীর কোন মুখ হয়না, পতাকা হয়না, ধর্ম হয়না, দেশ হয়না, জাত হয়না, রঙ হয়না, গোষ্ঠী হয়না, সংগঠন হয়না।


সেইরকম এক বিপ্লবী আমাদের এই "The Tank Man" অথবা এই "The unknown rebel".. ১৯৮৯ সালে চীন এর কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদী। একা গিয়ে ট্যাংকের সামনে তিয়ান্যান্মিন স্কোয়ারে দাঁড়িয়েছিল। সেইদিক থেকে ভাবলে সব বিপ্লবী চরিত্রগতভাবে বামপন্থী। উইকিপিডিয়া তে রয়েছে,

" Within the left–right political spectrumLeft and Right were coined during the French Revolution, referring to the seating arrangement in the French National Assembly. Those who sat on the left generally opposed the Ancien Régime and the Bourbon monarchy and supported the Revolution, the creation of a democratic republic and the secularisation of society while those on the right were supportive of the traditional institutions of the Ancien Régime. Usage of the term Left became more prominent after the restoration of the French monarchy in 1815, when it was applied to the Independents.The word wing was first appended to Left and Right in the late 19th century, usually with disparaging intent, and left-wing was applied to those who were unorthodox in their religious or political views."
সমাজটা কি আরো সুন্দর হতোনা যেখানে এইধরনের বিপ্লবীদের যদি রাষ্ট্রশক্তি শত্রু হিসেবে না দেখে রত্ন হিসেবে দেখতো? মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য একজন কি বামপন্থী বিপ্লবী ছিলেন না? সেই সময়ের শাসকের চক্ষুশূল ছিলেন মহাপ্রভু। এমনকি তার মৃত্যু নিয়েও অনেক রকম বিতর্ক রয়েছে। সিনেমার কথা যদি বলি, সত্যজিৎ রায়ের "গণশত্রু" র কথা তো বলতেই হয় যেখানে এক ডাক্তারবাবু মহামারীর কথা বলতে গিয়ে শাসকের শত্রু হয়ে ওঠেন। The "Das Capital" কি শুধু বামপন্থী বই নাকি, সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী, অচলায়তন কি বামপন্থী বই নয়?  তিলোত্তমার ন্যায়বিচারের দাবীতে গর্জে ওঠা প্রত্যেকে, প্রত্যেকে যাদের তিলোত্তমা রক্তচোখের যন্ত্রণার কথা মনে ভেবে, গলার কাছে কিছু একটা যেন দলা পাকিয়ে উঠেছে - সেই প্রত্যেকে এক এক জন বামপন্থী বিপ্লবী। তারা সবাই বাইরে জন লেননকে ডেঁফো ছেলে বলে গাল দিলেও ভেতরে সেই জন লেননকেই মানেন।
যারা স্বপ্ন দেখে - " Imagine theres no heaven, its easy if you try. / No hell below us, above us - only sky."
তারা প্রজা। বিয়ন্ড দ্য ওয়ালের Free Folks র মতো। যারা সবাই রাজা। কেউ কারো গোলাম নয়। এমন কোন দেশের কি আমরা স্বপ্ন দেখতে পারিনা যেখানে প্রতিবাদ করতে ঝান্ডা লাগেনা? কি বিপদ হতে পারে এরপর - তার কথা ভাবতে হয়না? এমন কোন কি কখনো দেশ হবে যেখানে বিপ্লবী বলে অপঘাতে মরতে হবেনা?  যেখানে "অত্যাচারীর খড়্গ-কৃপাণ ভীম-রণ ভূমে রণিবেনা।" এমন কোন কি দেশ হবে যেখানে সমাজে-খবরে কেষ্টবিষ্টু র খবর না ছেপে নজরুল-জীবনানন্দ দের খবর ছাপা হবে? আমি সেই দিন হবো শান্ত। ততদিন সমাজের কোন না কোন কোণে কোন না কোন "ট্যাংক ম্যান" জন্মেই যাবে। আমরা হলাম গিয়ে রক্তবীজের ঝাড়। যত অন্ধকারই আসুক, "তদাত্মানং সৃজাম্যহম্‌"।।

Saturday, September 7, 2024

লালবাজারে দ্বিতীয় দিন - We shall overcome

 সকাল ছটা। সেই দুপুর থেকে একটা গোটা রাত শেষ, তখনো সিপি মহাশয়ের ঘুম ভাঙেনি। এড্রেনালিনে কেটে গিয়েছে ১৬ টা ঘন্টা, এবার? চারিদিকে বিক্ষিপ্তভাবে পঞ্চাশ জন পড়ে রয়েছে। কেউ চা খেতে খেতে বলছে - আমার মনে হয় যারা ফ্রেশ হবে বলে গেছে, আর মনে হয় ফিরবেনা। আরেকজন উত্তর দিলো - তবু আমরা যেকজন আছি, পড়ে থাকবো। 

আরেকজন একটু আশাবাদী হলো - না, না। সবাইকে ডেকেছি। দশটা বাজতে দাও না। সবাই আসবে। 

আমিও ডেকেছিলাম সবাইকে। মাথা ভোঁ ভোঁ করছে। কাল সারা রাত যা গেছে। পুলিশের রাবার গানের সামনে  গান-বাজনা - স্লোগান। 

পুলিশ শুরুতে হেলমেট পরে বিরাট কোহলি সাজলেও একটু রাত হতেই বুঝে গেছে আমরা ছ্যাবলামি করছি জাস্ট ওদের সাথে। ওরাও তাই হেলমেট খুলে চেয়ারে বসে আছে। 

হঠাৎ লোকজন দাবী তুললো আমরা ব্যারিকেডের এপাশে রাস্তায় ট্রামলাইনের উপর শুয়ে আছি, আর তোমরা চেয়ারে বসে আরাম করছো। ভোরবেলা দেওয়া হলো জন-গণ-মন বাজিয়ে। পুলিশ উঠে দাঁড়ালো আমাদের সাথে। একসাথে গাইলাম। বুঝলাম - দেশ এখনো স্বাধীন আছে। আর থাকবে। 

কিন্তু এখন সকালে বেশি লোক আর নেই। আমি আবার এক কাপ চা খেলাম। সিগ্রেট টানলাম। একটা ছোট্ট জমায়েতে জনমত কি জানতে গেলাম। বুঝলাম, কেউ আর ওঠার কথা ভাবছে না। সত্যি বলতে কি - আমিও না। সবার মাথায় এক জেদ চেপে গেছে - এর শেষ দেখে ছাড়বো। পুলিশ ভেবেছিলো, সকালে লোক কমে গেলে আমরা অবস্থান তুলে নেবো। কিন্তু সেটা হলো না। ফোন করলাম বেহালার এক বন্ধুকে। এক বোতল ও.আর.এস আর একটা প্যারাসিটামল আনতে বললাম। সেও ফোনের অপেক্ষাতেই ছিলো। তার জ্বর ছিলো। কিন্তু এক ডাকে বাইক নিয়ে বেরিয়ে এলো। লোকজন ছবি তুলে গ্রুপে গ্রুপে পাঠাতে লাগলো। ইটস নাও অর নেভার। লোক কম। সবাই সবাইকে ভরসা দিচ্ছে - আরে চিন্তা নেই, লোক আসবে। 

আর ওরা এলো। আমার বন্ধু এলো। তার এক ঘন্টার পরেই লোকজন ফিরে এলো। জানিনা সবাই কিভাবে তখনো স্লোগানিং করে যাচ্ছে। শরীরে এক ফোঁটা জোর নেই। শুধুমাত্র মনের জোরে। ততক্ষণে প্রচুর লোক আমাদের জন্য কেউ মুড়ি, কেউ রুটি কলা, কেউ সন্দেশ, কেউ কোল্ড ড্রিংক্স, কেউ জল ইত্যাদি ইত্যাদি দিয়ে যাচ্ছে। এত খেয়েছি আমরা একজন তো বলেই দিলো - আর খেতে পারছিনা। এবার ঘুমিয়ে পড়বো। 

মানুষের এত ভালোবাসা আমরা সেদিন পেয়েছি। সেই মানুষের কোন ধর্‌ম, বর্‌ণ, জাত কিচ্ছু ছিলো না। আমরা সবাই সেদিন এক মানুষ ছিলাম।

আর দুপুর থেকে বিকেল গড়াতেই হল বাংলায় বাস্তিল দূর্গের পতন৷ আকাশটাও সেদিন কেঁদেছিলো ছাত্র আন্দোলনের এই ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে।। 

পাঁচ মিনিট

"বিষ টা খাওয়ার আগে একবার আমাকে বলতো!! " কথাটা শেষ করতে না করতেই গলা ধরে এলো কিরণ এর। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এর বাইরে ...